আব্দুল্লাহ আল মামুন, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি।
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে গাঁয়ের জোরে এক সংখ্যালঘু পরিবারের বসত বাড়ী দখলের
চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার মনমথপুর ইউনিয়নের দেগলাগঞ্জ বাজারের চেনা
ঠাকুর শীলের ছেলে সন্তোষ কুমার শীল গত ১৪মার্চ পার্বতীপুর মডেল থানায় তার
প্রতিবেশী নজরুল কাজী, নুর ইসলাম কাজী, মিজান কাজী, বাদল কাজী ও তাদের পিতা
কাজী কুতুব উদ্দীনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগে জানা যায়, ২০১৪সালে তাজনগর মৌজার জেএল নম্বর ৮ দাগ নং ৯৮০ খতিয়ান
৪৬২ তফসিলের দুই দশমিক তিন আট শতক জমির মধ্যে ৪০শতক জমি সন্তোষ ঠাকুর তার
জ্ঞাতি ভাই রামপ্রসাদ ঠাকুরের কাছ থেকে ক্রয় সুত্রে মালিকানা লাভ করেন। সেই থেকে ওই
জমিতে বাড়ি নির্মান করে বাবা চেনা ঠাকুরসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বসবাস
করে আসছেন। এ জমির মালিকানা দাবী করে নজরুল কাজী, নুর ইসলাম কাজী, মিজান
কাজী ও বাদল কাজী ২০১৫সালে দিনাজপুরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা (নং
৮/১৫) করেন। কিন্তু মহামান্য আদালত গত তারিখে মামলাটি খারিজ করে দেন। এ ঘটনার পর
থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন লাঠিসোটা ও গায়ের জোরে তাদের বসতভিটে থেকে উচ্ছেদের
চেষ্টা করতে থাকে। গত ১৪ মার্চ ২০১৮ অভিযুক্ত ব্যক্তিগণ লাঠিসোটা ও ভাড়াটে লোকজন
নিয়ে তাদের বসত ভিটায় খুটি গেড়ে আরেকদফা দখলের চেষ্টা চালায়। এ দফায়
প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় ঘটনাস্থল থেকে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়। তবে ভবিষ্যতে যে
কোন মুহূর্তে বিবাদী পক্ষ বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে আবারও তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা
চালাতে পারে। এ শংকায় সন্তোষ ঠাকুর শীল পার্বতীপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের
করেন। গত রোববার সকালে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে, সংখ্যালঘু পরিবারের গৃহবধু পপি
রানী (২৬) কান্নজড়িত কন্ঠে বলেন “বাবু তোমরা হামার দিকে না তাকাইলে হামার বাড়ি
ওরা দখল করি নিবে। আমি মেয়ে মানুষ খোলা যায়গায় গোসল করতে হয়, গোসলের যায়গা
ঘিরে দিতে গেলেও ওরা বাঁধা দেয়। আর কতদিন খোলা আকাশের নিচে স্নান
কোরমো?” এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ নজরুল কাজীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি
সন্তোষ ঠাকুর শীলের সাথে জমির মালিকানা নিয়ে তাদের পরিবারের বিরোধের
কথাস্বীকার করে দাবী করেন, বর্ণিত তফসিলের দুই দশমিক তিন আট একর জমি সিএস
রেকর্ডে আমার দাদা কাজী ছমির উদ্দীনের নামে রয়েছে। এ জন্য আমরা আদালতে মামলা
করেছি। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ওই জমিতে কোন ঘর-দোর তুলতে দিবো
না বলেও তিনি জানান। এ ব্যাপারে পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
হাবিবুল হক প্রধান সন্তোষ ঠাকুর শীলের তার বাড়িতে হামলা ও উচ্ছেদের চেষ্টার লিখিত
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।