গাইবান্ধা থেকে শেখ হুমায়ুন হক্কানী ঃ বন্যায় বীজ তলা নষ্ট হওয়ায় বন্যা
কবলিত গাইবান্ধার চারটি উপজেলায় রোপা আমন ধানের চারা তীব্র সংকট দেখা
দেয়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। ফলে চলতি মৌসুমেও রোপা আমন চাষ লক্ষ্যমাত্রা
অর্জিত না হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
উলেখ্য, জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও
সাঘাটাসহ চারটি উপজেলা বন্যা কবলিত হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে।
সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের তেলিয়ান গ্রামের কৃষক কাশেম
আলী জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে বীজতলা তৈরি করে ছিলেন। কিন্তু বন্যার
পানিতে বীজতলার ডুবে চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পানি সরে গেলেও আমন
চাষ করার অভাবে নতুন করে চারা লাগানো যাচ্ছে না।
একই উপজেলার বুরুঙ্গী গ্রামের কৃষক সোলায়মান আলী জানান, তার পাঁচ বিঘা
জমিতে রোপা আমন ধান রোপনের ইচ্ছা ছিল। এরমধ্যে অতিকষ্টে জেলার
গোবিন্দগঞ্জ থেকে চারা সংগ্রহ করে মাত্র দুই বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন
করছেন। বাকী তিন বিঘা জমি চারা অভাবে চাষ করতে পারেননি। এ অবস্থা শুধু
সাঘাটায় নয়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চারটি উপজেলাতেই একই অবস্থা বিরাজ
এদিকে জেলার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীসহ বিভিন্ন উচু এলাকায় আমন চারা
পাওয়া গেলেও তার দাম দুই থেকে তিন গুন বেশি। এক পোন (২০ গোন্ডা) চারা দেড়
থেকে দুই’শ টাকা বেশি হওয়ার কথা নয়। সেখানে প্রতি পোন চারা সাড়ে ৫শ’
থেকে ৬শ’ টাকা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া পরিবহন বাবদ অর্থ ব্যয় করে এতোদুর
থেকে চারা সংগ্রহ করে চাষাবাদ করা কষ্টকর।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, বন্যায় ১৮ হাজার ৭শ’ ১২
হেক্টর জমির আমন বীজতলা, রোপা আমন, আউশ ধানসহ শাক-সবজি তলিয়ে
গেছে। এছাড়াও অন্যান্য ফসলি জমি তলিয়ে গেছে ৬শ’ ৬৭ হেক্টর। এদিকে বন্যা
পরবর্তী অবস্থায় পুনরায় ৮৪ হাজার ৪শ’ ৭১ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের
লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও চারা সংকটের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব নাও
হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
শেখ হুমায়ুন হক্কানী