টি.আই সানি, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
শিল্প-কারখানা সমৃদ্ধ গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তা
ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। এখানে বড় বড় বিপনী-বিতান,
ছোট বড় মিলিয়ে হাজার খানেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও প্রায় ২৫টির
মতো ব্যাংক, কয়েকটি বীমা কোম্পানী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে
আসছে। নানা ধরনের কাজে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক লোকের পদচারণায়
মুখর থাকে মাওনা চৌরাস্তা। কিন্তু বিপুল পরিমাণ এই জনসংখ্যার জন্য
নেই কোন শৌচাগারের ব্যবস্থা। আর শৌচাগারের অভাবে অনেকটা
বাধ্য হয়েই মাওনা উড়াল সেতুর নিচে প্রাকৃতিক কাজ সারছেন
তাঁরা। এর ফলে সৃষ্ট দূগর্ন্ধে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ
মানুষদের। আর জায়গা সংকটের অজুহাতে দেখাচ্ছেন শ্রীপুর পৌরসভা ও
জেলা প্রশাসন।
মাওনা চৌরাস্তার ব্যবসায়ী মাহমুদুল হাসান বলেন, মহাসড়কের সংলগ্ন
দোকান হওয়ায় মাঝে মধ্যেই পরিবহনের যাত্রীর টয়লেটের খোঁজে আসেন।
পরে তাদের পার্শ্ববর্তী শপিংমল গুলোর টয়লেট ব্যবহার করতে পরামর্শ দেয়া
হয়। কিন্তু শপিংমল গুলোর টয়লেট তালাবদ্ধ থাকায় বেশ বিপাকে পড়তে হয়
তাদের। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন মহিলারা। তবে, উপায়ন্ত না
দেখে অনেকেই প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাওনা উড়াল সেতুর
নিচেই প্রাকৃতিক কাজ সারছেন। তবে একটি গণশৌচাগার থাকলে
যাত্রী সাধারণসহ স্থানীয়দের খুব উপকার হতো।
মাওনা চৌরাস্তা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রওশন হাসান বলেন,
মাওনা চৌরাস্তায় গণশৌচাগার না থাকার কারণে সাধারণ জনগণ যত্রতত্র
প্রয়োজন মেটায়। যার ফলে স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা
প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। সরকারী ব্যবস্থাপনায় পয়নিষ্কাশনের
পদক্ষেপে নিলে এধরনের সংকট নিরসন হবে বলে আমার বিশ্বাস। পরিবেশের
ভারসাম্যও যথাযথ ভাবে সুরক্ষিত থাকবে।
মাওনা চৌরাস্তার ব্যবসায়ী জুয়েল আহমেদ বলেন, মহাসড়কে থেকে
মাওনা বাজার সড়কের শুরুতেই জেলা প্রশাসনের প্রায় ২শতাংশ জমি
রয়েছে। গণশৌচাগারের জন্য এ জায়গাটি ব্যবহারের মাধ্যমে দুর্ভোগ
লাঘব করা যেতে পারে।
শ্রীপুর পৌরসভার সচিব বদরুজ্জামান বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এ স্থানে
জায়গা সংকটের কারণে গণশৌচাগার তৈরী করা হয়নি। তবে জায়গা
পাওয়া সাপেক্ষে পৌরসভার পক্ষ থেকে গণশৌচাগারের তৈরী করে দেয়া হবে।
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হুসেন বলেন,
উড়াল সেতুর নিচ থেকে বিভিন্ন সময় হাইওয়ে পুলিশের উদ্যোগে ময়লা
আবর্জনা পরিষ্কার করা হলেও গণশৌচাগার না থাকায় তা থেকে রক্ষা
পাওয়া যাচ্ছে না। প্রকট দুগর্ন্ধে আশপাশের পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি
হচ্ছে। ষ্টীল ও বাঁশের তৈরী বেড়া দিয়েও উড়াল সেতুর নিচে জায়গাগুলো
রক্ষা করা যাচ্ছে না। গণশৌচাগারের বিষয়টি মাসিক আইন শৃঙ্খলা
কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে এবং উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর জমি অধিগ্রহনের জন্য
একটি আবেদন করা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আকতার বলেন,
গণশৌচাগারের আবেদনটি এখন ভূমি অধিগ্রহন অফিসে
প্রক্রিয়াধীন। ভূমি অধিগ্রহন অফিস থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর
গণশৌচাগারের বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন,
এখন পর্যন্ত কোন আবেদনপত্র পাইনি। তবে, সড়কের পাশে জায়গা পাওয়া
সাপেক্ষে গণশৌচাগার তৈরী করা যেতে পারে।