বাংলার প্রতিদিন ডটকম ঃ–
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ করে আন্দোলন করা চাকরি প্রত্যাশীদের ওপর লাঠিপেটা ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়েছে
পুলিশ।
রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে পুলিশের এ তৎপরতার মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে শাহবাগ মোড়ের আশপাশে অবস্থান নেন অন্দোলনকারীরা।
এর আগে দুপুর ৩টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন কোটা সাংস্কারের আন্দোলনে অংশ নেওয়া শতশত শিক্ষার্থী। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
এসময় ঘটনাস্থলে আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, সংসদ অধিবেশন চলছে। আমরা চাই এই অধিবেশন থেকেই ঘোষণা দেওয়া হোক কোটা পদ্ধতি সংস্কারের। সংসদে আমাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিলে তবেই আমরা রাস্তা ছাড়ব।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে টিয়ারশেল নিক্ষেপের পর পরই পুলিশ আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয় ও লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় মুহূর্তেই তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কয়েকজন আন্দোলনকারীকে আটকও করে পুলিশ।
পুলিশের ধাওয়ায় আন্দোলনকারীরা চারুকলার সামনে অবস্থান নিয়ে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তখন পাবলিক লাইব্রেরির সামনে অবস্থান নিয়ে থেমে থেমে তাদের লক্ষ্য করে কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এক পর্যায়ে ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয় আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে।
পুলিশের আক্রমণে পিছু হটে আন্দোলনকারীরা টিএসসির দিকে সরে এলে তাদের ওপর চড়াও হন ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী।
পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে পড়ে ঢাকা ট্রিবিউনের ফাহিম রেজা নূর, প্রথম আলোর আসিফুর রহমান, ইউএনবির ইমরান হোসেন, বাসসের কামরুজ্জামান রেজা এবং বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের তারেক হাসান নির্ঝর আহত হন।
দুপুর দেড়টার দিকে পূর্বঘোষিত গণপদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা জড়ো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে।
সেখান থেকে পদযাত্রাটি শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের রাস্তা দিয়ে রাজু স্মৃতি ভাস্কর্য হয়ে নীলক্ষেত ও কাঁটাবন ঘুরে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।
রোববার ঢাকার সাথেই সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
ওই এলাকায় যেকোনো অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে দুপুর থেকেই সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। ঘটনাস্থলে জলকামানসহ অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ডিএমপির রমনা জোনের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, তারা আন্দোলন করছে, করুক। জনদুর্ভোগ যাতে না হয়, সেজন্য অনুরোধ করছি।
পুলিশের রাতের তৎপরতা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ১৪ মার্চ জন্য ৫ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দিতে সচিবালয় অভিমুখে যেতে চাইলে আন্দোলনকারীদের বাধা দিয়েছিল পুলিশ। সেসময়ও কয়েকজনকে আটক করা হয়।
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ৫৫ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের অগ্রাধিকার কোটা রয়েছে। আর বাকি ৪৫ শতাংশ নিয়োগ হয় মেধা কোটায়।
বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি সংস্কার দাবি করে আন্দোলনকালীরা বলছেন, চাকরিতে সব মিলিয়ে ১০ শতাংশ কোটায় নিয়োগ হতে পরে।