অনলাইন ডেস্কঃ-
কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে মোর্শেদাকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর গত ১০ এপ্রিল তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের সভাপতি এশাকে বহিষ্কার করেছিল ছাত্রলীগ।
কিন্তু এবার ইফফাত জাহান এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর মোর্শেদা খানম মুনসহ ২৪ জনকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ।
সংগঠনের সাবেক একদল নেতা এশার পক্ষে দাঁড়ানোর পর গত ১৩ এপ্রিল তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিয়ে সুফিয়া কামাল হলের ঘটনা তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনটি।
ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে হল কমিটির সহসভাপতি মোর্শেদাসহ ২৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ জানিয়েছেন।
দর্শনের ছাত্রী এশা যে কমিটির সভাপতি, সেই কমিটিতে সহসভাপতি ছিলেন উদ্ভিদ বিজ্ঞানের ছাত্রী মোর্শেদা।
১০ এপ্রিল হলের ভেতরে মোর্শেদার পা কেটে দেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়ার পর এশার উপরও হামলা হয়েছিল। এশার পক্ষাবলম্বনকারী বলছেন, মোর্শেদার পা কেটে দেওয়া হয়নি, নিজেই আঘাত করতে গিয়ে কাচে পা কেটেছিল তারা।
২৪ জনকে বহিষ্কারের তথ্য জানিয়ে ছাত্রলীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কবি সুফিয়া কামাল হলে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হল।’
‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এরা এশাকে মারধরের ঘটনায় জড়িত ছিল। তদন্তের ভিত্তিতে তাদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
বহিষ্কৃতদের মধ্যে মোর্শেদা ছাড়াও রয়েছেন কেন্দ্রীয় সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক খালেদা হোসেন মুন, সুফিয়া কামাল হল সহসভাপতি আতিকা হক স্বর্ণা ও মীরা, হল সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতি আক্তার সুমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শারমিন আক্তার সুমি, সহ সম্পাদক শ্রাবণী, উপ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আশা প্রমুখ।
বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মুন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এক বছর হলে থাকি না। কক্সবাজারে একটা জব করছি গত ১১ মাস। এমাসে ঢাকায় এসে ছিলাম খালার বাসায়। তারা কীভাবে আমার সংশ্লিষ্টতা পেল?’
সংগঠনের গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটির কেউ কোনো যোগাযোগ করেনি বলেও জানান মুন, যিনি এশার আগে সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
তদন্ত কমিটিতে ছিলেন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নিশীতা ইকবাল নদী ও নূসরাত জাহান নূপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স।
তদন্ত কমিটির সদস্য প্রিন্স এর আগে বলেছিলেন, ‘ওই ঘটনার সব ভিডিও এবং প্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ওই হলের ছাত্রলীরাই এশার ওপর নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে।’
মুন বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ছাত্রী মনিরা, তাকে বহিষ্কার করেছে। ও ভারতে আছে, সে কীভাবে সেখান থেকে ওই দিনের ঘটনায় জড়িত ছিল?’
‘চারুকলার আশার ডান হাত ভেঙেছে কিছু দিন আগে, সে কীভাবে ভাঙা হাত নিয়ে এশাকে মারধর করল?’
ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুন।
তিনি বলেন, ‘আমি তেলবাজি করি না, স্ট্রেইট কাট কথা বলি, সে কারণে ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে আমি মনে করি।