বাংলার প্রতিদিন ডটকম ঃ-
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্ত হলেই কেবল নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, নির্বাচন তখনই হবে, যখন দেশে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি হবে। নির্বাচন তখনই হবে, যখন খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে আসবেন এবং আমাদের নেতৃত্ব দেবেন। নির্বাচন তখনই হবে, যখন দেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে।
শনিবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ফখরুল এ কথা বলেন। জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সহযোগী সংগঠন জাতীয় যুব সংহতি তাদের ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চলমান গণতান্ত্রিক সংগ্রাম’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে।
খালেদা জিয়া অসুস্থ দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বলতে চাই, আপনারা অবিলম্বে অন্তত ‘দেশনেত্রীকে’ মুক্তি দিন, যেন তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। তিনি নিজে যেভাবে চাইবেন সেভাবে চিকিৎসা হবে।
সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে সরকারকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, সংসদ ভেঙে দিন, ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ পদত্যাগ করুন। তাহলেই কেবল দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, আজকে দেখুন ব্যাংকগুলো তাসের ঘরের মতো যে কোনো সময়ে ভেঙে পড়বে, শুধু সময়ের অপেক্ষা। দুর্নীতি লাগামহীন। কারও কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যেখানে পারছে, যেমন করে পারছে লুট করে নিয়ে চলে যাচ্ছে।
কোথাও কোনো নিরাপত্তা নেই অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব জায়গায় একটা চরম নৈরাজ্য বিরাজ করছে। একটামাত্র কারণ এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। তাদের কোনো নৈতিক অধিকার নেই ক্ষমতায় থাকার। আজকে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গণতান্ত্রিক সব ব্যবস্থাগুলোকে ধবংস করে দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চাইছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে কমনওয়েলথ সম্মেলনে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে করমর্দন করছেন দেখলাম। তাতো হচ্ছে। কিন্তু আমরা ফলাফল কী দেখতে পাচ্ছি। ফলাফল দেখতে পাচ্ছি, মিয়ানমারের সঙ্গে এতো সুসম্পর্ক, এখন পর্যন্ত ১০ লাখের মধ্যে একজন রোহিঙ্গাকেও আপনারা ফেরত পাঠাতে পারেননি। ভারত এতো বড় বন্ধু, এখন নাকি সম্পর্কের সর্বোচ্চ স্তরে তারা অবস্থান করছে। সেই ভারতের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানির এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। এখনও সীমান্তে আমাদের লোকজনকে গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, এরা (সরকার) আর (ক্ষমতায় থাকতে) পারবে না। পারবে না এজন্য যে, জনগণের সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন উদ্বোধন করেন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরী, প্রধান বক্তা ছিলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার।
আরও বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবীব লিংকন, নওয়াব আলী আব্বাস খান, অ্যাডভোকেট হোসনে আরা আহসান, মাওলানা রুহুল আমিন, মো. সেলিম মাস্টার, কাজী জয়া আহমেদ, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, যুব জাগপার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক তুহিন প্রমুখ।
সভাপতিত্ব করেন জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক মো. মহসীন সরকার এবং পরিচালনা করেন নিজাম উদ্দিন সরকার।