বাংলার প্রতিদিন ডটকম ঃ-
রাজধানী ঢাকায় সড়কে এক কলেজ ছাত্রের হাত বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর মৃত্যু, গোপালগঞ্জে এক পরিবহন শ্রমিকের হাত বিচ্ছিন্ন এবং ঢাকায় এক গৃহকর্মীর পা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর এবার বেপরোয়া ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে বগুড়ায় আট বছরের শিশু সুমির হাত এবং রংপুরে চার বছরের মেঘলা মনির পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
রোববার পৃথক এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুটি শিশুকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সুমির বাবা দুলাল মিয়া বগুড়ার শেরপুর উপজেলার একটি দোকানের কর্মচারী। মা মরিয়ম বেগম অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। উপজেলার শেরুয়া এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তারা জানান, স্থানীয় ব্র্য্যক স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী সুমিকে নিয়ে দুপুরে মা মরিয়ম বেগম বাজার করে ফিরছিলেন। তখনও সুমি মায়ের হাত ধরা। শেরুয়া এলাকায় রাস্তা পার হতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে রাস্তায় পড়ে যায় সুমি। এ সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাক তার একটি হাতের ওপর দিয়ে চলে যায়। ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মুহূর্তে কনুই থেকে হাতটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
স্থানীয়রা সুমিকে উদ্ধার করে প্রথমে দুবলাগাড়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং সেখান থেকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সুমি ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ২ নম্বর ইউনিটে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. নির্মলেন্দু জানান, শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। রাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দেখে ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রংপুরের মাহিগঞ্জে ইটবোঝাই ট্রাকের চাপায় মেঘলা মনি নামে চার বছরের শিশুর পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, মেঘলার বাবা বাবু মিয়া কসাইটুলি কলেজ রোডের একটি রাইস মিলের চাতালে কাজ করেন। ওই চাতাল থেকে বাবার সঙ্গে দেখা করে শিশুটি রাস্তার দিকে আসে। তখন দ্রুতগতির একটি ট্রাক রাস্তার পাশে থাকা মেঘলার পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে শিশুটির পা মুহূর্তেই রাস্তায় মিশে যায়। সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে সে।
পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান।
মাহিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহ আলম জানান, ট্রাকটি আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছে।
গত ৩ এপ্রিল ঢাকার কারওয়ান বাজারে দুই বাসের রেষারেষিতে মধ্যে পড়ে একটি হাত হারান তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ এপ্রিল তিনি ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
ওইদিনই গোপালগঞ্জে বাস-ট্রাকের সংঘর্ষে ডান হাত হারান পরিবহন শ্রমিক হৃদয়। গত শুক্রবার রাতে বাসের চাপায় এক পা হারান গৃহকর্মী রোজিনা। এর মধ্যে আরও কয়েকটি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে।