মহিউদ্দীন আহমেদ, কলকাতা।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সোমবার রাজ্য জুড়ে নমিনেশন জমা নেবার কাজ সরকারী ভাবে চলে। কিন্তু সোমবার নমিনেশন জমাকে কেন্দ্র করে আগের মতো অব্যাহত রইল সন্ত্রাস। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান সহ একাধিক জেলাতে শাষকদল তৃনমূলের সন্ত্রাসে বোমাবাজি, গুলি থেকে সর্বশেষ এক তৃনমূল কর্মীরা মৃত্যু, বাদ রইলনা কিছুটা। বীরভূমের সিউড়ী ১ নং ব্লকের করিধ্যাতে বিজেপি ও তৃনমূলের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি ও গুলি চলে। গুলি লেগে দিলদার খান নামের এক তৃনমূল কর্মী মারা যান। বিজেপি তাকে নিজেদের কর্মী দাবী করলেও তৃনমূল পাল্টা দাবী করে, দিলদার তাদেরই কর্মী। এদিনই বীরভূমের জেলা সদর সিউড়ীতে দলের পার্টি অফিসে তৃনমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মন্ডল নিহত দিলদার খানের বাবা ও স্ত্রীকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এবং দিলদিরের স্ত্রীও দাবী করেন তার স্বামী তৃনমূল করতো। এদিন বেশ কিছু দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এক বিজেপি কর্মীও বোমাবাজিতে আহত হয়।
বিরোধিদের সঙ্গে আক্রান্ত হয় সাংবাদিকদেরও। রামপুরহাট পাঁচ মাথা মোড়ে একটি দৈনিক সংবাদপত্রের ক্যামেরাম্যানকে মারধর করা হয়। সব্যসাচী ইসলাম নামের ঐ সাংবাদিকের মাথা ফেঁটে যায়। লাভপুর ব্লক অফিসে একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলের ক্যামেরাম্যানকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এদিকে মহম্মদ বাজার ব্লক অফিস চত্বরের পাশাপাশি এলাকায় কড়া পুলিশি ব্যবস্থা থাকলেও দুটো বোমা ফাটে ব্লক চত্বরে।
সিউড়িতে বিজেপি জেলা পার্টি অফিসে তৃণমূলের দুস্কৃতী বাহিনী হামলা চালায়। গাড়ি ভাংচুরও করা হয়। ভাঙচুর হয় বিজেপি পাঁটি অফিস।
সব জায়গায় পুলিশ থাকলেও তারা ছিলো এক রকম ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে। বোলপুর এসডিও অফিসের সামনে তৃনমূলের লোকজন আগে থেকেই জমায়েত করে বসে ছিলো। ভিতরে তৃনমূলের কিছু যুবক ছেলেও রয়েছে। সাধারন মানুষ কোন কাজে গেলে তাদেরকে দফায় দফায় জিঙ্গাসাবাদ করছে তৃনমূলের রাখা যুবকরা। পুলিশের সামনেই তারা আবার পরিচয় পত্র দেখতে চাইছেন।
পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে এসডিও অফিসে মনোনয়নের খবর করতে গিয়ে বহিরাগতদের হাতে গুরুতর আক্রান্ত হয় সাংবাদিকরা। ঘটনায় প্রায় ১০ জন সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহকুমাশাসক দপ্তর ও দুর্গাপুরের আদালত চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়।আহত সাংবাদিক বিকাশ সেন ও সঞ্জয় দে গুরুতর আহত অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি।এদিন সকাল ১১টা নাগাদ বিকাশবাবু যখন মনোনয়ন সংক্রান্ত খবর সংগ্রহ করতে যায় সেই সময় হঠাৎ করেই কয়েকজন বহিরাগত মুখে গামছাবাঁধা যুবক তাঁর ওপর চড়াও হয়। মহকুমাশাসকের দপ্তরের সামনে তাকে সিরিতে ফেলে বেধড়ক মারধর শুরু করে। ঘটনাটি দেখে আশেপাশে থাকা কয়েকজন সাংবাদিক ছুটে তাকে বাঁচাতে এলে তাদেরকেও বেধরক মারধর করে ওই বহিরাগতরা।ঘটনায় আহত হয় প্রায় ১০ জন সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিক। এরপরেই বহিরাগতরা চম্পট দেয়।অভিযোগ, পুলিসের সামনে দুষ্কৃতীরা ১৪৪ ধারা থাকা কালিনী হামলা চালায়।
মনোনয়ন পর্ব শুরু হওয়ার কারনে দূর্গাপুর আদালত চত্বরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু যখন সাংবাদিক হেনস্থার ঘটনা ঘটছে সেই সময় নীরব দর্শকের ভূমিকায় সক্রিয় থাকতে দেখা যায় পুলিশকে। সকাল থেকে এই চত্বরে শাসক দলের প্রায় ২ হাজার নেতা ও কর্মীদের দখলে।মহিলা কর্মীরা সক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো নিন্দার ঝড় সাংবাদিক মহলে, সাথে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।