মোঃ ফাহিম আহম্মেদ রিয়াদ (বগুড়া প্রতিনিধি)ঃ ঈদ ও রোজাকে কেন্দ্র করে
বগুড়ার চিকন সেমাইয়ের ব্যাপক চাহিদা থাকায় পুনরায় সচল হয়ে উঠেছে
বগুড়ার অসংখ্য সেমাইপল্লীর চাকাগুলি। ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় দম ফেলার সময়
পাচ্ছেন না সেসব কারখানার কারিগররা। শবেবরাতের পর থেকেই শুরু হয়েছে
সেমাইয়ের উৎপাদন। প্রতিদিন সেহরির পর থেকেই কারখানাগুলোয় শুরু হয়
সেমাই তৈরির কাজ চলে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত। সেমাই কল মালিকরা
জানিয়েছেন, শ্রমিকদের মজুরি ও বিদ্যুতের দাম বাড়লেও
প্রতিযোগিতামূলক বাজারের কারণে সেমাইয়ের দাম তেমন বাড়েনি।
প্রকারভেদে প্রতি কেজি সেমাই ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেমাই কল
মালিক ও কারিগরদের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, এক বস্তা (৩৭ কেজি) ময়দা
থেকে গড়ে ৩৫ কেজি চিকন সেমাই পাওয়া যায়। এক বস্তা ময়দা থেকে
সেমাই তৈরি এবং তা রোদে শুকানোর বিনিময়ে প্রত্যেক কারিগরকে এবার
১৮০ থেকে ২০০ টাকা মজুরি দেওয়া হচ্ছে। এক বছর আগে এই মজুরি ছিল
১৫০-১৬০ টাকা। বগুড়ার চিকন সেমাইয়ের কদর দেশজুড়ে। শুধু বগুড়াতেই যত
সেমাই তৈরী হয় তা আর অন্য কোন অঞ্চলেই তৈরী হয় না। শতাধীক কারখানায়
৪০০ নারী শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। প্রতিটি কারখানায় প্রতিদিন
গড়ে ২৫০ কেজি অর্থাৎ ১০ খাঁচি করে সেমাই তৈরি হচ্ছে। বগুড়া কাহালু
শেকাহার এলাকার এক সেমাইকল মালিক জানান, সেমাই তৈরির জন্য
প্রতিদিন ভোর থেকে কারিগররা এসে কাজ শুরু করেন। আর বৃষ্টির কারণে
উৎপাদিত সেমাই রোদে শুকানোও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এতে প্রতিদিন গড়ে
১২৫ কেজি অর্থাৎ ৫ খাঁচি করে উৎপাদন কমেছে। শহরের রাজাবাজার
এলাকায় সেমাইয়ের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানের শুরু থেকেই শুরু
হয়েছে বেচাকেনা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন। আড়ৎ
মালিকরা জানিয়েছেন, কারখানায় উৎপাদন কম হওয়ার কারণে বাজারে
সেমাইয়ের সরবরাহও কম। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা
আসছেন। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে, বিক্রি ততো বাড়বে বলে তারা আশাবাদী।