মেহেদী হাসান উজ্জ্বল,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক, এক সময়ের সোনালী আঁশ
খ্যাত পাটরে চাষ এখন বিরুপ্তির পথে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধরি সাথে সাথে কৃষি জমি অকৃষিতে পরিনত হওয়া,স্বল্প সময়ে জমিতে
অধিক ফসল ফলানোর প্রবনতা,পাট পচনের পানি সংকটসহ বিভিন্ন কারণে পাট চাষ যেন এখন
কৃষকের অনিহা আর অবহেলার একটি অংশ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সাথে কথা বলে
জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে পাটের দরপতন, উৎপাদন খরচ বেশী ও পাট ছড়ানো পানরি অভাবে
কৃষক পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। ১ বিঘা জমিতে গড়ে ৭ থেেক ৮ মণ পাট
উৎপাদন হয়। আর প্রতি মণ পাট র্সবােচ্চ ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। এক্ষেত্রে বাজার মূল্য
হিসেবে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় কৃষক পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ৬০ এর দশকে দশেরে বভিন্নি এলাকায় পাটক্রয় কেন্দ্র ছিল, আবার বড়
বড় জুট মিলের চাহিদা পুরনে কৃষকরা পাট চাষে ব্যাপক লাভবান হতো। অপরদিকে ক্রয় কেন্দ্রগুলো
পাট সংগ্রহ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করত। ফলে ন্যায্য মুল্য প্রাপ্তির
নিশ্চয়তা নিয়ে কৃষকরাও ঝুকে পড়তো ব্যাপকহারে পাট চাষে।
উপজলো কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজলোর সাতটি ইউনিয়নের কিছু কিছু
জমিে তোশা পাট ৯৫ হেক্টর দেশি পাট ৪০ হেক্টরসহ মোট ১৩৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ আবাদ
লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। গত বছর ১৪০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হলেও এবার ১৩৫ হক্টেরে
নেমে আসায় গত বছরের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়নি। এভাবে দিন দিন পাট চাষ থেকে মুখ
ফিরিয়ে নিচ্ছে কৃষক।
এদিকে অল্পসংখ্যক কৃষক যারা পাট চাষ করছেন, জৈষ্ঠ মাস শেষ হয়ে এলেও তেমন বৃষ্টির দেখা না
পাওয়ায় ও এলাকার বেশিরভাগ খাল,বিল শুকিয়ে যাওয়ায় চিন্তিত কৃষক। পানি না থাকায় পাট
পচানো নিয়ে শঙ্কায় কৃসক,এতে পাটের গুনগতমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে
জানান কৃষকরা।
উত্তরকৃষ্ণ পুর গ্রামের কৃষক মোন্নাফ জানান, বর্তমানে একজন দিনমজুরের দৈনিক
হাজিরা ৩শ থেকে ৪শ টাকা। এক বিঘা জমির পাট কেটে তা জাগ দিয়ে শুকিয়ে ঘরে তুলতে
যে পরিমাণ দিনমজুর লাগে তাতে পুর্বের খরচ মিলিয়ে মণপ্রতি পাটের দাম পড়ে ১ হাজার
টাকার উদ্ধে। আবার পাট পচনের খালবিল গুলির মধ্যে কতগুলিতে পানি নইে,কোনো কোনো
খালগুলিতে মাছ চাষ করায় পানি নষ্ট হওয়ার আশংকায় পাট জাগদেয়া অনেক বড় সমস্যা তাই পাট
চাষে তেমন আগ্রহ নেই তাদের। প্রতিবছর মনপ্রতি পাটের বাজার মূল্য ১ হাজার থকে ১ হাজার
২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বেশী এবং বাজার মূল্য কম হওয়ায় আমরা পাট
চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি।
সুজাপুর ডবল ব্রীজ গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, গত দু,বছর থেকে ১বিঘা জমিতে
পাট চাষ করে পাট জাগ দেয়া পানির অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তাই এখন কলা চাষ
করি এতে পরিশ্রম কম লাভ বেশি।
এ ব্যাপারে উপজলো কৃষি সম্প্রসারন অফিসার রুম্মান আক্তার বলেন, প্রকৃতিক বিপর্যয়ের
ফলে সঠিক সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদী,নালা,খাল,বিল শুকিয়ে যায়ার ফলে পাট পচানো ও
নিড়ানোর অনশ্চিয়তা পাট চাষের একটা বড় সমস্যা বলে মনে করনে অনেক কৃষক। তারপরেও
উপজেলার দৌলতপুর, খয়েরবাড়ী, শিবনগর, আলাদীপুর ও পৌরসভার কিছু অংশে পাট চাষ হয়ছে
বলে তিনি জানান।