ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ৩নং দিকনগর ইউনিয়নের হারুনদিয়া গ্রামের আব্দুর সাত্তার ফকির নামে এক রাজাকার প্রধান ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে ভাতা উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শৈলকুপা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোস বিরাজ করছে। অবিলম্বে তদন্তপূর্বক ব্যব¯’া গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানাগেছে,ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হারুনদিয়া গ্রামের কাউসার ফকিরের ছেলে আব্দুর সাত্তার ফকির ১৯৭১ সালে রাজকারের প্রধান হিসাবে মাগুরা জেলার শালিকা থানায় রাজাকারের গুরুত্বপুর্ন কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করতো।
স্বাধীনতার পর আব্দুর সাত্তার ফকির সুযোগ বুঝে মাগুরা থেকে পালিয়ে শৈলকুপা উপজেলার হারুনদিয়া গ্রামে নিজ বাড়ি চলে আসে।
এরপর শৈলকুপা এলাকার মুক্তিযোদ্ধরা আব্দুর সাত্তার ফকিরকে মাগুরায় রাজাকারের গুরুত্বপুর্ন কমান্ডারের দায়িত্বে থাকার কারনে,ু আব্দুর সাত্তার ফকিরকে মেরে ফেলার জন্য তাকে ধরে ফেলে। এরপর বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল হাইয়ের আত্মীয় স্বজন তাকে না মারার জন্য অনুরোধ করেন এবং ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য দাবি করেন।
বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল হাইয়ের বিশেষ অনুরোধের কারনে এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা তাকে জীবন ভিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় গেলে শৈলকুপা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ঝিনাইদহ জেলা কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন মনোয়ার হোসেন মালিতা। মনোয়ার হোসেন মালিতা আব্দুস সাত্তার ফকিরের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে রাজাকার পদবিকে আজব মেসিনে প্রিন্ট করে মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়ে নিয়মিত সরকারি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের ব্যব¯’া করিয়ে দেন।
এধরনের প্রভাব শালিদের দুর্নিতির কারনে ঝিনাইদহ জেলা সহ শৈলকুপার অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা পায়না। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মনোয়ার হোসেন মালিথার নিকট ভাতার বিষয়ে জানতে গেলে তিনি বলেন মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নিতে হলে ৫০ থেকে ১ লক্ষ লাগবে।
এই টাকা দিতে পারলে প্রতিমাসে ভাতার ব্যব¯’া করা যাবে। টাকা না দিলে ভাতার ব্যব¯’া করতে পারবো না।
এই মনোয়ার হোসেন মালিতা ২০০১ থেকে বর্তমান পর্যন্ত টাকার বিনিময়ে শত শত রাজাকারকে আজব মেসিনে প্রিন্ট করে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন এবং টাকার বিনিময়ে ১২শত লোককে মুক্তিযোদ্ধা বানাতে আবেদন পাঠিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ে।
আরো জানাগেছে, আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী এই মনোয়ার হোসেন মালিতার উপর নাখোশ। তিনি ২০০৩ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সামনে বক্তব্যে দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবল্টু বলে ব্যঙ্গ করেছিলেন এবং শেখ হাসিনাকে অশালিন ভাষায় গালিগালজ করেছিলেন। যা ওই সময় ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় গঠন করার পর শৈলকুপা সংসদ সদস্য আব্দুল হাই এই মনোয়ার হোসেন মালিতাকে কি করে সিলেকশন করে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসাবে নির্বাচিত করলেন ?
এ কারনে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধরা আব্দুল হাই এবং মনোয়ার হোসেন মালিতার উপর ক্ষুদ্ধ ও নাখোশ হয়েছেন।
এই মনোয়ার হোসেন মালিতা সরকারি জায়গায় মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট নির্মান করে অনেক দোকান ঘর দলিল করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসি। তিনি শৈলকুপা উপজেলার কোর্ট পাড়ায় বিশাল আলিসান বাড়ি নির্মান করেছেন কিভাবে ? তা ঝিনাইদহের এলাকাবাসি জানতেচায়।
আব্দুর সাত্তার ফকির ও মনোয়ার হোসেন মালিতার কাছে তাদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ,তারা দুজন সমস্ত অভিযোগে অস্বিকার করেন।