সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ॥ প্রায় পুরো গ্রামের
মানুষ ফৌজদারী মামলার আসামী। দেড় ডজন মামলায় পর্যায়ক্রমে তাদেরকে হাজিরা
দিতে হয় আদালতে। তারপরও মামলা নিস্পত্তির চেয়ে প্রতি বছরে এর সংখ্যা বাড়ছে।
তাই এবারে সাজানো মামলার হয়রানী থেকে মুক্তির দাবীতে গ্রামবাসী অভিযোগ
করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক সহ বিভিন্ন দপ্তরে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজারহাট
উপজেলার নাজিমখাঁর ইউনিয়নের মনিডাকুয়া ঝাকুয়াপাড়া গ্রামে। ।
অভিযোগ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উক্ত গ্রামের মোহাম্মদ আলী কর্তৃক ৪ একর
৬৬ শতাংস জমির মালিকানা নিয়ে রাজারহাট সহকারী জজ আদালতে একই গ্রামের
ওহাব আলী গং এর বিরুদ্ধে একটি বাটোয়ারা মামলা দায়ের হয়। এর জের ধরে বিভিন্ন
সময় মামলার বিবাদী ওহাব আলী চারটি জিআর ও একটি নন-জিআর মামলা এবং তার
ছোট ভাই আব্দুল হাই,ভগ্নিপতি আখের আলী সহ আতœীয় স্বজনকে দিয়ে প্রতিপক্ষ
ও গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে আরো ৫টি জিআর মামলা দায়ের করেন। চুরি,হত্যা
চেষ্টা,চাঁদাবাজী,নারী শিশু নির্যাতন সহ বিভিন্ন ধারায় এসব মামলা দায়ের হয়।
যথারীতি ওইসব গ্রামবাসীর নামে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল ধারায় এসব মামলায়
আদালতে চার্জসীটও দাখিল করা হয়। এরমধ্যে সম্প্রতি রাজারহাট থানার চাঁদাবাজীর
১টি মামলা (নং-১০/১৪) থেকে কুড়িগ্রাম জজ আদালতের বিচারক সকল আসামীদের
বেখসুর খালাসের রায় প্রদান করেন।
এদিকে একই গ্রামের সোনাউল্ল্যার পুত্র সাইদুর রহামান ১একর ৭১শতক জমির
মালিকানা নিয়ে রাজারহাট সহকারী জজ আদালতে একটি বাটোয়ারা মামলা দায়ের
করেন। মামলার বিবাদী শাহাআলম খন্দকার আদালতে জমিজমা সংক্রান্ত বাটোয়ারা মামলা
হওয়ার পর ২০১৬ সালের প্রথম থেকে থেকে ২০১৭ইং সনের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাটোয়ারা
মামলার বাদী সাইদুর রহমান সহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে ৮টি
জিআর ও নন-জিআর মামলা দায়ের করেন। ৮টি মামলারই বাদী শাহাআলম খন্দকার এবং
সকল মামলার স্বাক্ষীও একই ব্যাক্তি। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন
সময় দায়ের করা এসব মামলায় গ্রামের সাধারন মানুষদেরকে হয়রানী মূলক ভাবে
আসামী করার অভিযোগ উঠেছে। গ্রামবাসীর অনেকের অভিযোগ,ওই মামলা গুলো
হওয়ায় সহজ সরল খেটে খাওয়া সাধারন মানুষগুলো হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।
অপরদিকে মামলার পাশাপাশি শাহাআলম খন্দকারের ছেলে ফেরদৌস আলম দীপু ও তাদের
ভাড়াটে লোকজন সহ আগ্নে অস্ত্রের ভয় দেখালে স্থানীয় জনতা রিভলবার সহ দীপুকে
আটক করে পুলিশে সোপর্দ করলেও পুলিশ বিচারাধীন মামলায় শাহাআলম খন্দকারের পক্ষে
তার বাড়ির কর্মচারী ও গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অন্যান্য মামলার ৬জন
স্বাক্ষীকে এই মামলায় স্বাক্ষী করার অভিযোগ উঠেছে।
গ্রামের সাইফুল,ইলিয়াছ,সাইদুল ও বদিউজ্জামান অভিযোগ করেন,এসব মামলা
আদালতে বিচারাধীন থাকা সত্বেও শাহাআলম খন্দকারের পক্ষে পুলিশের একজন
কর্মকর্তা নোটিশ দিয়ে ও পুলিশ পাঠিয়ে আপোস মিমাংসার নামে তার অফিসে
বসার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন।
এবিষয়ে আঃ ওয়াহাব জানান,জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে জের ধরে এসব মামলা
হয়েছে,তবে নতুন করে আর মামলা করিনি।
শাহাআলম খন্দকার জানান,তারা বাটোয়ারা মামলা করার পর মামলা নিস্পত্তি হওয়ার
পূর্বেই আমার ভোগ দখলকৃত জমির ধান কেটে নিয়ে যাওয়ায় আমি আইনের
আশ্রয় নিয়েছি,আদালত যে রায় দিবে আমি তাই মেনে নিবো।
রাজারহাট থানার ওসি (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র দেব জানান,এবিষয়ে কোন এক পক্ষ পুলিশ
হেডকোয়ার্টারে অভিযোগ করায় কুড়িগ্রামের এডিশনাল এসপিকে বিষয়টি
তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে ।#