অনলাইন ডেস্কঃ
নন–এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে নন–এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের মূল সড়কের বিপরীত পাশে তাদের এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশের মূল সড়কের সামনে অবস্থান নিয়ে এমপিভুক্তির দাবিতে কর্মসূচি পালন করছেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। পুলিশের অনুমতি না থাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাতে অবস্থান নিতে পারছেন না তারা। এতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রায় সহস্রাধিক ভুক্তভোগী খোলা আকাশের নিচে এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ১৮ থেকে ২০ বছর ধরে বিনা বেতনে শিক্ষকতা করছি। আমাদের বেতন-ভাতা নিশ্চিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বারবার ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, ২৩ তারিখ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ। এর মধ্যে যদি সরকার কোনো সিদ্ধান্তে না আসে, তাহলে আমরা বাধ্য হব অনশনসহ কঠিন কোনো কর্মসূচিতে যেতে। রোজা ও ঈদের সময়টাতে তারা আধাবেলা কর্মসূচি দিলেও আজ থেকে লাগাতার অবস্থান নেবেন।
নানা স্লোগানে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিক্ষক-কর্মচারীরা এ কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নারী শিক্ষকরাও। নিজেদের অধিকার আদায়ে অনেক নারী শিক্ষক ছোট সন্তান রেখেই এ আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন বলে জানান।
আন্দোলনরত বরিশালের জল্লা ইউনিয়ন আইডিয়াল কলেজের ইতিহাসের প্রভাষক অরুণ কুমার বিশ্বাস বলেন, বিগত ১৮ বছর ধরে আমি শিক্ষকতা করছি। টিউশনি করে চলতে হয়। কোনো বেতন পাই না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স করে শিক্ষকতা পেশায় এসে মানবেতর জীবন যাপন করছি। বিয়ে পর্যন্ত করতে পারিনি। বর্তমানে ছোট বোনের বিয়ের খরচ যোগাতে পারছি না। শিক্ষকতা পেশায় এসে কি তাহলে ভুল করেছি? বাধ্য হয়ে এখন আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।
এর আগে একই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচিতে নামে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি ফেডারেশন। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনশন করার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা অনশন ভঙ্গ করে ফিরে যায়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা তখন তাদের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দেন।
সারাদেশে বর্তমানে সাড়ে সাত হাজার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ২৪২টি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাকে।
স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এসব প্রতিষ্ঠানকে এখনো এমপিওভুক্ত না করায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা।