সাকিল আহাম্মেদ ,গাজীপুর থেকে ঃ
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠাকালের দিক থেকে কনিষ্ঠতম এবং আয়তনের দিক থেকে সবচেয়ে বড় এই সিটিতে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন গাজীপুর নগরবাসী।
মঙ্গলবার বৃষ্টিভেজা সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর পর বছিরউদ্দিন উদয়ন একাডেমি কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার।
কোনাবাড়ির আ ক ম মোজাম্মেল হক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অন্যান্য দলের পোলিং এজেন্ট থাকলেও সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিএনপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট পাওয়া পায়নি। ভোট দিয়ে হাসান উদ্দিন অভিযোগ করেন, অনেকগুলো কেন্দ্র থেকে তার দলের নেতাকর্মী ও এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে।
এরপর আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিজের ভোটটি দিয়ে জানান, ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ মিথ্যা বলেও দাবি করেন তিনি।
সকালে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির কারণে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও দিন বাড়তে থাকার সাথে সাথে ভোটারদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। শুরুতে নারী ভোটার কম থাকলেও এখন বহু নারী ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে যাচ্ছেন।
ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ এ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ বলেই জানিয়েছেন ভোটাররা।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন নিশ্চিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আগের দিন থেকেই কেন্দ্রগুলোতে মোতায়েন আছে।
গাজীপুর পুলিশ জানিয়েছে, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রায় ১২ হাজার র্যাব, পুলিশ, আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৭টি এবং অতিরিক্ত একটিসহ র্যাবের মোট ৫৮টি টিম মোতায়েন আছে। এছাড়া পুলিশ এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসার সমন্বয়ে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৮টি মোবাইল ফোর্স, ২০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত আছে।
মোতায়েন করা হয়েছে ২৯ প্লাটুন বিজিবি। প্রতি দুইটি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ২৯ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে। এদের মধ্যে ১২ প্লাটুন জয়দেবপুর, বাসন চান্দনা চৌরাস্তা ও কাউলতিয়া এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া ৭ প্লাটুন কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকায়, ১০ প্লাটুন আছে টঙ্গী এলাকায়।
নির্বাচনের আগে ও পরে চার দিন ৫৭টি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত আছেন। আরো ১০ জন অতিরিক্ত হিসেবে সর্বমোট ৬৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে আছেন। সিটি কর্পোরেশনের প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে মোট ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত আছেন।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটানিং অফিসার রকিব উদ্দিন মন্ডল জানান, ইতোমধ্যে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে ৫৭টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। তাই ৫৭টির মধ্যে ৫৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৫৪জন ও সংরক্ষিত ১৯ মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৪জন এবং ১টি মেয়র পদের জন্য ৭ জন প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। সর্বমোট ৩৪৫জন প্রার্থী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৭জন। এর মধ্যে ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৫ জন পুরুষ এবং ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন মহিলা ভোটার।