নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি॥ নীলফামারীর সদরের সোনরায় ইউনিয়ন
বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে জয়চন্ডি- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি
দখল ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাধার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৩০ জুন) দুপরের দিকে বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ঘন্টাব্যাপী
মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এতে একাত্মতা ঘোষণা করে পার্শ্ববর্তী সোনারায় সংগলসী উচ্চ
বিদ্যালয়, সোনারায় সংগলসী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী,
অভিভাবকসহ প্রায় দুই সহ¯্রাধীক মানুষ অংশ নেয়।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, জয়চন্ডি- সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী এ.এম জিয়াউল ইসলাম, বিদ্যালয় পরিচালনা
কমিটির সভাপতি শংকর কুমার রায়, সোনারায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের
সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, সোনারায় সংগলসী
ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ, সোনারায় সংগলসী উচ্চ বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষক বাহার উদ্দিন, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি
আহসান হাবিব বাবু প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ১৯৩০ সালে ৭৩ শতাংশ জমির ওপর জয়চ-ি সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। সম্প্রতি সরকারি অর্থে উপজেলা
প্রকৌশল পিডিপি-৩ প্রকল্পের অধীনে বিদ্যালয়ের জমিতে সীমানা প্রাচীর
নির্মাণের কাজ শুরু হলে গত ২৩ জুন সোনারায় ইউনিয়ন বিএনপির
সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম শাহ্ধসঢ়; দলবল নিয়ে নির্মাণ কাজে বাধা দিয়ে
শ্রমিকদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের জমির কিছু
অংশে বাঁশ, কাঠ ও টিনের বেড়া দিয়ে দখলের চেষ্ঠা চালায়।
ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শংকর কুমার রায় বলেন, ১৯৩০ সালে
লোকাল বোর্ড স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় জয়চন্ডি- সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়টি। ১৯৬৮ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগী বিনোদ চন্দ্র অধিকারী,
প্রভানন্দ অধিকারী, কুমদ চন্দ্র অধিকারী ও কোনারাম অধিকারী ৭৩ শতক জমি
বিদ্যালয়ের নামে দান করেন। ওই সালে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ হয়।
সম্প্রতি বিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীরে নির্মাণ কাজ শুরু হলে বিদ্যালয়ের
ভোগদখলীয় জমির মধ্যে ৩০ শতক জমি ২০১৭ সালের ১১ আগষ্ট তারিখের
একটি ভুয়া দলিল দেখিয়ে নির্মাণ কাজে বাধা দেন এলাকার নূরুল ইসলাম
শাহ্ধসঢ়; ।
সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব বাবু বলেন,
‘ভূমিদস্যু নূরুল ইসলাম শাহ এর বড়ভাই আব্দুল মান্নান শাহ্ধসঢ়; ইউনিয়ন
আওয়ামী লীগের সভাপতি। বড়ভাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় সেই প্রভাবকে
কাজে লাগিয়ে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও জমি দখলে চেষ্টা
করছে।
এ ব্যাপারে, নূরুল ইসলাম শাহ্ধসঢ়; বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ের জমি দখল করিনি।
৬২ সালের রেকর্ড অনুযায়ী জমি মালিকের ওয়ারিশদের কাছ থেকে বিদ্যালয়ের
পেছন দিকের ৩০ শতাংশ জমি আমি ক্রয় করেছি। আমার ক্রয়কৃত ওই জমিতে
জোরপূর্বক দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, সহকারী জজ নীলফামারী সদর আদালতের স্বরণাপন্ন হলে আদালত
গত ২৭ জুন নির্মাণ কাজ বন্ধের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করে এবং ২৫
জুলাই মামলা শুনানীর দিন ধার্য করেন। সেখানে আমার বিরুদ্ধে অবৈধ
দখলের অভিযোগ সঠিক নয়।’
নীলফামারী থানার ওসি বাবুল আকতার বলেন, সরকারি কাজে বাধা এবং জমি
দখলের চেষ্টার ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা সরেজমিনে গিয়ে কাজ শুরু
করতে বলেছি, সেখানে কাজও চলছিল। কিন্তু গত ২৮ জুন নূরুল ইসলাম শাহ্ধসঢ়;
আদালত থেকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আনার কারণে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর
নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে।’