ঝালকাঠি সংবাদদাতাঃ- ঝালকাঠি বিসিক শিল্পনগরীর প্রকল্প পরিচালক অসীম কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে এ প্রকল্পের প্রতিটি পর্যায়ের বেপরোয়া লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। তাকে এ প্রকল্প থেকে সরিয়ে নেয়া না হলে শিল্পমন্ত্রীর নিজ এলাকা ঝালকাঠিতে নির্মানাধীন শিল্প নগরীর মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবার আশংকা দেখা দিয়েছে। ইতিপূর্বে ঝালকাঠি বিসিক শিল্পনগরীর প্রকল্প পরিচালক অসীম কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে ব্যাপক হরিরলুটের অভিযোগ উঠলে বিসিক চেয়ারম্যানের নির্দেশে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। খুলনা আঞ্চলিক পরিচালকের নেতৃত্বে গঠিত ২ সদস্যের তদন্ত কমিটি সরেজমিন কার্যক্রম শুরু করলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় তা কার্যক্রম স্তগিত হয়ে যায়। তদন্ত কার্যক্রম স্তগিত করিয়ে প্রকল্প পরিচালক অসীম কুমার ঘোষ ব্যাপক দূর্নীতি ও লুটপাটে মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে তাকে এজিএম পদে পদায়ন সহ বদলী করা হলেও ঝালকাঠি বিসিক শিল্প নগরীর প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে বহাল রাখা নিয়ে ¯’ানীয় কর্মকর্তা কর্মচারী সহ সচেতন মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বলে সরেজমিন অনুসন্ধানে জানাগেছে।
বিস্তারিত অনুসন্ধানে জানাগেছে, ঝালকাঠি বিসিক শিল্প নগরীর ভূমি অধিগ্রহন ও বালু ভড়াটের কাজ ছাড়া তেমন কোন অগ্রগতি নাহলেও ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের প্রকল্প বাস্তবায়নে ভ্রমন খাতে বরাদ্দ সাড়ে ৪ লাখ টাকার পুরোটাই প্রকল্প পরিচালক অসীম কুমার ঘোষ ভূয়া ট্যুর ও টিএ,ডিএ দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছে। ঝালকাঠিতে কর্মরত থাকা অব¯’ায় সে শিল্পনগরীর মাটি ভড়াট কাজের টেন্ডার নিয়ে দূর্নীতি, ফ্যাক্স ও ষ্টেশনারী মালামাল ক্রয়ে অনিয়ম, বাড়ি ভাড়া নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি, শিল্পনগরীর গাছ বিক্রির অর্থ আত্মসাৎ, লবন মিল মালিকদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি, ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে উৎকোচ আদায় করাসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পরেন। এসব অভিযোগ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির কার্যক্রম শুরু হলেও বিসিকের স্ব-ধর্মীয় এক পরিচালকের ঘনিষ্টতার সুযোগে তা ¯’গিত করে উল্টো পদোন্নতির পুরুস্কার লাভ কয়ায় তার এসব দূর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহষ পা”েছনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক কর্মকর্তা জানায়, অর্থলোভী কর্মকর্তা অসীম কুমার শিল্প নগরীর জন্য ষ্টেশনারী, প্রিন্টিং ও পাবলিকেশন, মটর সাইকেল, ফটোকপি মেশিন, কম্পিউটার সামগ্রী ক্রয়ের জন্য বরাদ্দের সিংহভাগ অর্থ আত্মসাতের জন্য অভিনব কৌশল অবলম্বন করেন। নিয়মানুযায়ী শিল্প নগরীর জন্য একটি ক্রয় কমিটি গঠিত করে তার মাধ্যমে এসব মালামাল ক্রয় করার কথা থাকলেও তিনি তার একক সিদ্ধান্তে এসব ক্রয়ের নামে বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নি”েছন। কাজে প্রকল্পের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীর সহযোগীতায় ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে এ অর্থ আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও অসীম কুমারের বিরুদ্ধে শিল্পনগরীর জমির মূল্য নির্ধারণে অনিয়মের অভিযোগে ইতিমধ্যেই আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। জমি মালিকদের অভিযোগ উদ্দেশ্য মূলক ভাবেই সঠিক ভাবে অধিগ্রহনকৃত জমির মূল্য নির্ধারন করেনি প্রকল্প পরিচালক। তাই বাধ্য হয়েই আমরা আদালতের স্বরণাপন্ন হয়েছি। এই প্রকল্প পরিচালক শুরু থেকেই এ প্রকল্পের কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করেছে। অসীম কুমার গত ৫ জুন ঝালকাঠি বিসিক কার্যালয়ের উপব্যব¯’াপকের পদ থেকে অব্যাহতি নেন। তাকে এ পদ থেকে অব্যাহতি দিলেও প্রকল্পপরিচালকের পদ আকড়ে থাকায় ঝালকাঠি এসে এসব অপকর্ম চালিয়েই যা”েছন। হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার সহায়তায় গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বরাদ্দের অর্থ এখনো ঝালকাঠি কার্যালয়ে এসে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করেছেন।
জানাযায় গত ১৪ জুন ২০১৬ তারিখ প্রায় ২২ হাজার টাকার ষ্টেশনারী মালামাল ক্রয় দেখানো হলেও বাস্তবে তা ক্রয় করা হয়নি। শহরের একটি ষ্টেশনারী দোকান থেকে ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে উল্লেখিত তারিখে এ মালামাল ক্রয় দেখানো হয়। এসব মালামালের মধ্যে মোটা অংকের কাগজ, রেজিষ্ট্রার খাতা, এনার্জি বাল্ব, ফাইল বোর্ড ও কভার উল্লেখযোগ্য। প্রকল্প পরিচালক স্বাক্ষরিত এক পত্রে গত ২৯ মে তারিখের মধ্যে এসব মালামাল সরবরাহে ব্যার্থ হলে এ কার্যাদেশ বাতিল করার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক নিজেই গত ১৪ জুন তারিখে ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে ঐ দোকান থেকে এসব মালামাল লিখিয়ে বাস্তবে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার টাকার জিনিসপত্র ক্রয় করেন। বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন। অনুরুপ শহরের একটি প্রেস থেকেও ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে মাত্র ১১ হাজার টাকার কাজ করিয়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন।
এ অব¯’ায় শিল্পমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু তার নিজ জেলার উন্নয়নের স্বার্থে নেয়া এ মহৎ উদ্দোগ বিসিক শিল্পনগরীর প্রকল্পটি যাতে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত এহেন ইদুর-বেড়ালরা ফোকলা করে দিতে না পারে সে লক্ষে একটু সুদৃষ্টি ও মনিটরিং প্রয়োজন। তার এ মহৎ পদক্ষেপকে সঠিক ভাবে ও যথানিয়মে বাস্তবায়ন হ”েছ কিনা তদন্ত হলেই বেড়িয়ে আসবে থলের কালো বিড়াল ।#