নিজস্ব প্রতিবেদক:
নড়াইলের কালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান ও
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের অপসারণের দাবিতে
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমূল হুদার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর
স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায়
কালিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে আবু হেলাল মোল্যা, আফতাব উদ্দিন
আহমেদ,আবুল বাশার মোল্যা ও সাহিদুর রহমান প্রমুখ স্মারকলিপি প্রদান
করেন। এ সময় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।
ঐতিহাসিক অবদান তথা মুক্তযোদ্ধা-মুক্তিযুদ্ধ শব্দদ্বয় জাতীয়
সংবিধানে স্থান না পাওয়ায় মুক্তিযুদ্ধারা সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে অবহেলা ও
করুনার পাত্রে পরিনত হয়ে পড়েছেন।এর ফলশ্রুতিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের
ইতিহাস বিকৃত হওয়ার পাশাপাশি যত্রতত্র যে কেউ নানা ধরনের
ফন্দিফিকির করে মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন। ইতিমধ্যে অর্থ, প্রতিপত্তি ও
রাজনৈতিক বিবেচনায় বিপুল সংখ্যক ভূয়া, এমনকি রাজাকারও
মুক্তিযোদ্ধা হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের যাবতীয় ত্যাগ ও বীরত্বে ভাগ বসিয়ে
চলেছেন। ওই সমস্ত বিপুল সংখ্যক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে
রাষ্ট্র ও জনগণের বিপুল অর্থ ও সুযোগ-সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে
তাদের অভিযোগ। দ্রুত মুক্তিযোদ্ধারা এর অবসান চান।
প্রধান দু’টি দাবি সম্বলিত স্মারক লিপিতে মুক্তিযোদ্ধারা উল্লেখ করেন,
জাতীয় সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দদ্বয় সংযোজনসহ এসবের
আইনী সুরক্ষা দিতে হবে, যাতে কেউ লেখায় রেখায় আকারে ইঙ্গিতে ও
কথাবার্তায় ওই শব্দদ্বয়ের বিরুদ্ধাচারণ করলে তা রাষ্ট্রদোহিতার অপরাধ বলে
গণ্য হবে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণা করে
সাংবিধানিক জাতীয় মর্যাদার আলোকে তাঁদের উন্নততর মৌলিক
অধিকার নিশ্চিত করার দাবী করেছেন।
এছাড়া, বঙ্গবন্ধু সরকারের ১৯৭২ সালের ০৭ আগষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞার
ভিত্তিতে সারাদেশের সকল জেলা, উপজেলা ও থানাওয়ারী ‘উচ্চ পর্যায়ের
বিচার বিভাগীয় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাই কমিশন’ গঠন করে
দ্রুততম সময়ের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি নির্ভুল তালিকা প্রণয়ণ
করতে হবে। এছাড়া ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রমানিত হলে এবং এর সঙ্গে
জড়িতদের রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বিচার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা
করতে হবে। ইতিপূর্বে যেসব ভুয়ারা মুক্তিযোদ্ধা সেজে সরকারের নিকট
থেকে ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন তার তা ফেরত নেয়ার
দাবী উত্থাপন করেছেন।