অনলাইন ডেস্কঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু গ্যাসও দিতে পারেনি, দেশের উন্নয়নও করতে পারেনি। আমি আগেই বলেছি, মুচলেকা দিয়ে বাংলাদেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় যেতে চাই না।’
আজ শনিবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এই সংবর্ধনা উৎসর্গ করছি বাংলার মানুষকে।’
ভারতের আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট ডিগ্রি অর্জন, মহাকাশে সফলভাবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট পাঠানো, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড অর্জন ও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করা, চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়া এবং দেশের উন্নয়ন ও অর্জনে অনন্য সফলতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছি। দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছি। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। কারণ নির্বাচন ঠেকাতে পারলে আবার অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু দেশের জনগণের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা বিএনপির এসব জ্বালাও পোড়াও ঠেকিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে। দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্তিত করেছে। আবার বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ দেশেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম । কিন্তু বিএনপি আবার মাঝ পথে সেটিকে বন্ধ করে দেয়। কারণ তারা দ্বিতীয় দফায় আবার ক্ষমতায় আসে। যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই আমাদের নেওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দেয়।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তাদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। অথচ এই খুনিরা দম্ভভরে বলেছিল তারা শেখ মুজিবকে হত্যা করেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭৫ সালের আগে বাঙালি ছিল বীরের জাতি। আর ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই বাঙালি হলো খুনি জাতি। কলকাতায় আমরা যে বাসায় ছিলাম সেখানে এক কাপড় বিক্রেতা আসতেন তিনি আমাদের বললেন আপনারা কীসের জাতি? যিনি আপনাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তাকে হত্যা করল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে আমরা আমাদের সম্মান হারিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী ক্ষমতাভোগীরা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে ব্যস্ত ছিল। তারা এ দেশের মানুষের ভাগ্য বদলাতে কোনো কাজ করনি। কিছু সুবিধাভোগির জীবন উন্নত হয়েছে কিন্তু বাংলার মানুষের ভগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমাকে ৭৫ পরবর্তী অনেক ঘাত প্রতিঘাত অতিক্রম করতে হয়েছে। কিন্তু পিছপা হইনি। জনগণের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে জাতির পিতার হত্যার বিচার শুরু করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ শুরু করেছি। কিন্তু জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মানপত্র পাঠ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রবীণ নেতা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বিশাল গণসংবর্ধণায় দলের নেতারা বক্তব্য দেন।