অনলাইন ডেস্কঃ
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সবসময় আশাবাদী। সব ধরনের নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র সবসময় গণতন্ত্রের পক্ষে। তাই আমরা সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করি।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ শেষে মার্শা বার্নিকাট এ মন্তব্য করেন।
এ সময় সাংবাদিকরা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তাঁর মন্তব্যের ব্যাপারে জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, ‘গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য ব্যক্তিগত নয়, সেটা আমার দেশের বক্তব্য।’
গত ২৮ জুন ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মার্শা বার্নিকাট গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘খুলনা ও অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যালট বাক্স ছিনতাই এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ও পোলিং এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের খবরে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। এ ছাড়া বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ও পোলিং এজেন্টদের গ্রেপ্তার ও পুলিশি হয়রানির বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্যের তিনদিন পর গত ১ জুলাই এর সমালোচনা করেন নির্বাচন কমিমশনার রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘উনি (বার্নিকাট) কমেন্টস করেছেন। তিনি যদি তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেন এবং কেন এই কমেন্ট করেছেন তা বলেন- তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব। কিন্তু কেউ যদি বলে আইন অনুযায়ী হলেও নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি, তাহলে আমাকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ডেফিনেশনটা দিতে হবে। সেই ডেফিনেশনটা আবার সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কি না সেটা কিন্তু একটি বিরাট ব্যাপার।’
নির্বাচনে অনিয়ম-জালিয়াতি এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ তোলায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সমালোচনা করেছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের তিন মন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান সম্পর্ক ও উভয় দেশের নাগরিকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়- এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত। একইসঙ্গে বাংলাদেশকে নিয়ে মন্তব্য করার আগে নিজেদের দিকে তাকানো উচিত।’
‘যেকোনো বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনাকে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য’ বলে আজ উল্লেখ করেন বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘মতামত দেওয়া যেকারো সাংবিধানিক অধিকার। আমার কোনো মন্তব্য কারো পছন্দ না হলে তিনি এটা নিয়ে কথা বলতেই পারেন। আর আমি বাংলাদেশে যেটা বলি, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের হয়েই বলি।’
ঢাকায় নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে আর্ল রবার্ট মিলারকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বর্তমানে বতসোয়ানায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন।