আশুলিয়ায় ব্যাঙে
শাহিন হাওলাদার , আশুলিয়া থেকেঃ
ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ায় যেখানে সেখানে ব্যাঙের ছাতার মত কিন্ডাগার্টেনসহ নামে বে-নামে বিভিন্ন স্কুল দিয়ে মালিকপক্ষ সরকারী আইনের তোয়াক্কা না করে অনিয়ম, দূর্নীতি করছে এবং অনেকেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে সচেতন মহলে। এমন কি কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসামাজিক কর্মকান্ডের ঘটনাও ঘটছে।
গত সাত দিন ধরে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সাভার ও আশুলিয়ায় বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ নেই, পরিবেশ পরিচ্ছন্নতাও তেমন নজরে আসেনি। স্কুলের ভেতরে দূগন্ধে নাক ধরে চলা ফেরা করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। জানা গেছে, সাভার উপজেলার আশুলিয়ার কুরগাঁও এলাকার আমির মডেল স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অনেকেই জানান, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৩৩) কে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করলেও এখন সে জামিনে রয়েছে। গত বছর ২০১৭ ইং এপ্রিল মাস থেকে এপর্যন্ত প্রায় ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী সুন্দরী মেয়েকে শিক্ষক নামের নরপশু জানোয়াররা নির্যাতন ও ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এক দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকি অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে বলে অনেকেই জানান। “শুধু আশুলিয়ায় সাত শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ঘটনার সাথে এক নরপশু অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন”। এরকম অনেক শিক্ষক এলাকায় এসেই আগে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়ায়, এরপর সুযোগ বুঝে স্কুল খুলে বসেন।
জানা গেছে, সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় এক শ্রেণীর লোক আগে সেলুনে কারিগর হয়ে চুল কাটার কাজ করতো, এখন শিক্ষক বনে গেছেন, এই শিক্ষকের মত অনেকেই সুন্দরী শিক্ষকা নিয়োগ দিয়েই নারীদের জিম্মি করে তাদের উপর নির্যাতন ও কুপ্রস্তাব দেয়ার ঘটনাও ঘটিয়েছে অনেক শিক্ষক, এ বিষয়ে অনেক বিচারও করা হয়েছে। সচেতন মহল বলছেন, শিক্ষকরা জাতির মেরুদন্ড। আর সেই শিক্ষকরা যদি নারীদের উপর হামলা করে এটা জাতি মেনে নিতে পারে না। যে শিক্ষক তার শিশু ছাত্রীকে ধর্ষণ করতে পারে, তারা কখনো জাতির মেরুদন্ড হতে পারে না। অনেকেই বলেন, শিক্ষাই তাতির মেরুদন্ড আসলে কি তাই? না, সুশিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড।
২৯ জুলাই, রবিবার উক্ত বিষয়ে সাভার উপজেলার ২৯৯ নং তালিকায় নাম একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম বলেন, সবার যা হবে, আমারও সেই গতি, জানা গেছে, কামরুল ইসলামের স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিারাপত্তা না থাকার কারণে কিছুদিন আগেও তার স্কুলের প্লে গ্রুপের এক ছাত্রীর মাথায় ইট পড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে বিল্ডিং এর মালিক ভালো মানুষ বলে ৪-৫ লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা করেন, মেয়েটি এখন সুস্থ্য।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর ঢাকার সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে মাত্র ১২১টি। কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয় রয়েছে ৪৪৬ টি। তুলনামূলক ভাবে চার ভাগের এক ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন মালিকনাধীন। এর বাইরেও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে অনেকেই জানান। এর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রধান হিসেবে সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহরিয়ার মেনজিসকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করেন। ওই সময়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার বরাতে গত বছর ৮এপ্রিল ২০১৭ একাধিক জাতীয় দৈনিকসহ অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, কলেজ, ও কোচিং সেন্টারের পাশাপাশি এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিজি প্রেসের কর্মীদের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার তথ্য রয়েছে। আরও অনেক তথ্য রয়েছে, যা লিখতে গেলে ইতিহাস হবে।
উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সাভার উপজেলার সহকারি শিক্ষা অফিসার সৈয়দা পারভীন’সহ একাধিক অফিসার বলেন, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বা সহকারি শিক্ষক যদি অনিয়ম, দূর্নীতি করেন, আমরা প্রমান পেলে ব্যবস্থা নিবো। এবং নারী নির্যাতন বা ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে পুলিশ প্রশাসন সে বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
তিনি বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বা কোন সমস্যা হলে আপনারা আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন।