মোঃ রুকুনুজ্জামান বাবুল, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
কয়লার অভাবে বড় পুকুরিয়ার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় লোড শেডিংয়ের যন্ত্রণা জাপটে
বসেছে উত্তরের আট জেলার মানুষের উপর। দিনে রাতে নিম্নে চার উর্ধ্বে ছয় বার বিদ্যুৎ চলে
যাচ্ছে। গড়ে ৮ ঘন্টা লোড শেডিং হচ্ছে। ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ট হয়ে উছেছে এতদাঞ্চলের মানুষের
জীবন যাত্রা। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ধসঢ়;ন ঘটছে। সেই সাথে কল কারখানাগুলিতে চলছে
বিপর্যয় কর অবস্থা। বড় পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক ৫২৫ মেঘাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিকটস্থ
খনি থেকে কয়লা সরবরাহ বন্ধ রয়েছে তিন মাস ধরে। কয়লাই একমাত্র চালিকা শক্তি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির।
উত্তরের ৮ জেলার জন্য প্রতিদিন বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় ৬৫০ মেঘাওয়াট। তার মধ্যে বড় পুকুরিয়া
থেকেই নেয়া হয় ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। বড় পুকুরিয়ার কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩ টি
উইনিট চালু রাখতে প্রতিদিন কয়লার প্রয়োজন ৪ থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন। নিকটস্থ খনির
প্রতিদিন কয়লা উত্তোলনের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে
খনির কোল ইয়ার্ড সম্পূর্ণটাই ফাঁকা। সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে কয়লা উত্তোলনের কথা বলা হলেও
বিষয়টি খুব একটা নিশ্চিত নয়। ইতোপূর্বে জ্বালানী মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হয়েছে বিদেশ থেকে
কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সচল রাখা হবে। কিন্তু এমন কোনো আলামত খনি এলাকায়
নেই। উত্তরের যে কয়েকটি জেলা লোড শেডিংয়ের কবলে পড়েছে, তার মধ্যে দিনাজপুর, রংপুর,
কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনির হাট ও গাইবান্ধা জেলার নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। চলতি
মৌসুমে আবাদি জমিতে পানি নেই। এই মৌসুমের ধান আবাদ বৃষ্টির পানির উপর নির্ভরশীল।
বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক এলাকার চাষী স্যালো, ডিপ ও অন্যান্য উৎস ব্যবহারের কথা ভাবছে। কিন্তু
সমস্যা দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহে। গত ১৬ জুন থেকে খনির নতুন ফেইজ নির্মাণের জন্য ভূ-
অভন্তর থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও গত মে মাসের গোটাটাই শ্রমিক আন্দোলনে
কয়লা উত্তোলন বন্ধ থাকে। খনি কর্তৃপক্ষের কাছে সে সময় জানতে চাওয়া হয়েছিল এর কোনো
প্রভাব নিকটস্থ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উদপাদনের ক্ষেত্রে পড়বে কিনা। তারা সাপ
জানিয়েছিলেন কখনই না। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জানা যায়, যে পরিমাণ কয়লা উদ্বৃত্ত থাকার
কথা তা নেই। খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের পরিমাণ ২০১৮ সালের ১৫জুন পর্যন্ত ধরা হয়েছে ১১
বছরে ১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম জানান,
কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। সেই সাথে লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ লোড শেডিংয়ের
জাতাকলে পড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেইট্রসিটি কোম্পানী লিমিটেড
নেস্কোর রংপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন সরকারের সাথে কথা হলে জানান, করার
কিছুই নেই। ৮ জেলায় বিদ্যুৎ চাহিদা ৬৫০ মেগাওয়াট। ৫২৫ মেগাওয়াট বড় পুকুরিয়া কয়লা
খনি থেকে আসত। এখন কয়লার অভাবে কেন্দ্রটি বন্ধ। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের চিন্তা ছিল বিদেশ
থেকে কয়লা এনে কেন্দ্রটি চালু রাখা হবে। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী
মাহামুদুর রহমান জানান, ২০ জুন খনি কর্তৃপক্ষ বলেছিলো কয়লা খনির কোল ইয়ার্ডে ১ লাখ ৮০
হাজার টন কয়লা মজুদ রয়েছে।