শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

নোয়াখালী সেনবাগে মাদককে `না’ বলায় প্রাণ দিলো সেনবাগের আবু সুফিয়ান

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৩২১ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালী সূবর্ণচরে ভগ্নিপতিকে পিটিয়ে হত্যা

 

এইচ.এম আয়াত উল্যা, নোয়াখালী প্রতিনিধি : সেনবাগের যুবক আবু সুফিয়ান। পেশায় গাড়ি চালক ছিলো। কিন্তু নিজ এলাকার অন্য মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের পাল্লায় পড়ে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। তাদের সাথে টুকটাক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন বলে জানা যায়। বিষয়টা এরকম মাদক ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে তাকে মাদক সেবন করতে দিতো। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের চাপে পড়ে এক সময় আবু সুফিয়ান মাদক সেবন ছেড়ে দিয়ে ভালো হওয়ার পথে চলে আসে। কিন্তু এটাই তার জন্য কাল হলো। এরপর সে তার পাওনা টাকার জন্য একই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী আবুল কালাম ও মো. ইয়াসিনকে চাপ দেয়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আবু সুফিয়ানকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত আবু সুফিয়ান নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের শায়েস্তানগর এলাকার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে। তার সিয়াম (৭) ও সাইমা (৪) নামের দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে। ২৮ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের শায়েস্তানগরে মাদক ব্যবসার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে নিহত হয় আবু সুফিয়ান (৩৩) নামে এক যুবক। পরে পুলিশ নিহতের মৃতদেহ করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এনিয়ে তাৎক্ষণিক বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ পরিবেশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর পরিবারের পক্ষ থেকে আপত্তি জানিয়ে অভিযোগ করা হয়, হত্যাকারীরা মুল ঘটনাকে ভিন্ন দিকে নিতে স্থানীয় লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভুল তথ্য সরবরাহ করে। এতে মূল ঘটনা আড়ালে চলে যায়। পরিবারের লোকজন জানায়, আবু সুফিয়ানের হত্যার ঘটনায় মাদক ব্যবসার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কোনো বিরোধ বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। মূলত মাদক সেবন ছেড়ে দেওয়া ও পাওনা টাকার দাবি করায় এলাকার চিহ্ণিত সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী আবুল কালাম, মো. ইয়াসিন ও তাদের সহযোগীরা আবু সুফিয়ানকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে একই এলাকার আবুল কালাম (২৮), মো. ইয়াসিন (২১), বাবুল (৩৫), নবী (২৫) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনকে আসামীকে সেনবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সেনবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল হাসান জানান, এঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার এজারভুক্ত বাবুল ও নুর নবী নামে দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে। তবে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মূল আসামীরা এখনো পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো জানান, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করার সময় নিহতের শরীরে একটি কাটা দাগ দেখা পাওয়া গেছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এবিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না। সরজমিনে গেলে নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, আমার স্বামী আবু সুফিয়ান একই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী আবুল কালাম ও ইয়াসিনের সাথে চলাফেরা করতো এবং মাদক সেবন করতো। এর সূত্র ধরে তারা এক বছর আগে আমার স্বামীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নেয়। সম্প্রতি আমাদের পারিবারিক চাপে সে মাদক সেবন ও বাজে আড্ডা ছেড়ে দেয়। পরে গত মাসে আমার স্বামী পাওনা টাকার ২০ হাজার টাকা তারা ফেরত দেয়। বাকী টাকার জন্য চাপ দিলে আবুল কালাম ও ইয়াসিন বিভিন্ন সময় আমার স্বামী মাদক দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ঘটনার দিন আমি বাড়ী ছিলাম না। এই সুযোগে ওই দিন সকালে আবুল কামাল ও ইয়াসিন আমার স্বামী সাথে আমাদের বসতঘরে দেখা করতে আসে। নিহতের মামা মো. আবদুর রশিদ জানান, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আসামীরা আমার ভাগিনা আবু সুফিয়ানের সাথে তার বসতঘরে দেখা করতে আসে। এসময় আমার ভাগিনা তার বাকী টাকার জন্য আবুল কালাম ও ইয়াসিনকে চাপ দেয়। এনিয়ে ঘটনাস্থলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে তারা আবু সুফিয়ানকে লাঠি ও রড় দিয়ে পিটাতে থাকে। একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে সে আহত অবস্থায় দৌঁড়ে পাশর্^বর্তী কোরবান আলীর বসতঘরে গিয়ে আত্মগোপন করে। আসামীরা সেখানে গিয়ে পুনরায় আবু সুফিযান বেদড়ক পিটাতে থাকে। এতে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। নিহতের মা বিবি হাজেরা বেগম, স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী আবু সুফিয়ানের হত্যার বিচার দাবি করে জানায়, শায়েস্তানগর এলাকায় আবুল কালাম ও মো. ইয়াসিনের নেতৃত্বে দীর্ঘ দিন ধরে একটি মাদক চক্র সক্রিয় রয়েছে। যারাই তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের তারা মাদক দিয়ে হয়রানি করে। একপর্যায়ে খুন করতেও দ্বিধা করে না। যার নজির তারা মাদক ছেড়ে ভালো পথে আসা আবু সুফিয়ানকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এরআগেও তাদের হাতের একই এলাকার আরো দুই যুবক প্রাণ হারিয়েছে। সেনবাগ থানার ভারপ্রাাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বর্তমান সরকার মাদক নিমূর্লে জিরো টলারেন্সে আছে। মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে। আবু সুফিয়ানে মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুই আসামীকে ধরা হয়েছে। অন্যদের ধরতেও পুলিশ তৎপর রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451