জয়নাল আবেদীন, লক্ষ্মীপুরঃ
লক্ষ্মীপুরে পাওনা টাকার দাবিতে নিজের মেয়ে ও নাতিকে আটকে রেখে জামাইকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে মহিন উদ্দিন নামে এক শ্বশুরের বিরুদ্ধে। একই সাথে দেড় বছর বয়সী শিশু নাতির শরীর পুড়িয়ে নির্যাতন ও মেয়ের স্বামীকে হুমকি ধমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) বিকালে চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওমর ফারুক (২৬)।
অভিযুক্ত মহিন উদ্দিন সদর উপজেলার পশ্চিম বটতলী গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ভুক্তভোগী ওমর ফারুক উপজেলার পূর্ব বাঙ্গাখাঁ গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে ও মান্দারী বাজারের একজন ব্যবসায়ী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে বেশ ঘটা করে পারিবারিকভাবে ওমর ফারুক ও দিলরুবা খানম রত্না’র বিয়ে হয়। বর্তমানে মীর ফয়সাল নাইম নামে দেড় বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান আছে তাদের। কিন্তু গত প্রায় দেড় মাস যাবত ফারুকের স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে লুকিয়ে রেখেছিল তার শ্বশুর। বারবার শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রী ও সন্তানের খোঁজ পায় নি ফারুক। এরপর আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতেও সন্ধান চালান তিনি। গত বুধবার (১০ অক্টোবর) খবর পেয়ে ছুটে যান উপজেলার বশিকপুর গ্রামে তার নানা শ্বশুরের বাড়িতে। সেখানে স্ত্রী ও সন্তানের দেখা পেলেও মর্মাহত হন তিনি। কারণ তার শিশু পুত্রের শরীরের একাংশ পোড়া ক্ষত অবস্থায় দেখেছিলেন। ভালো চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সন্তানকে নিতে চাইলে বাধা হয়ে দাঁড়ান তার শ্বশুর মহিন উদ্দিন। পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে স্ত্রী ও সন্তানের খোঁজ আর কোনোদিনই পাবে না বলে হুমকি দিয়ে ভুক্তভোগী ওমর ফারুককে তাড়িয়ে দেন তার শশুর।
ওমর ফারুক বলেন, আমাকে ও আমার শিশু সন্তানকে প্রাণে হত্যা করবে বলে একাধিকবার মোবাইল ফোনে ও সরাসরি আমার দোকানে এসে হুমকি ধমকি দিয়েছেন আমার শ্বশশুর মহিন উদ্দিন। গত বছর ১ লাখ টাকা দিয়ে ব্যবসার কাজে আমাকে সহযোগিতা করেছিলেন। আজ সেই টাকার জন্য আমার সুখের সংসার তছনছ করে দিচ্ছেন তিনি। আমি বুঝতেছি না কিছু টাকার জন্য কেন একটি সংসার ভেঙ্গে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে আমার শশুর বাড়ির লোকজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মহিন উদ্দিন বলেন, ফারুকের স্ত্রী ও সন্তানকে আমি আটকে রাখি নি। তার সন্তানকে নির্যাতনও করি নি। আমার শ্বশুরবাড়ি বশিকপুর থাকাবস্থায় গরম ভাতের মাড় পড়ে তার শরীরের একাংশ পোড়া গেছে। তবে পাওনা টাকা পরিশোধ করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করা ছাড়া ফারুক তার স্ত্রী ও সন্তানকে ফিরিয়ে নিতে পারবে না বলে জানান তিনি।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত দেনমোহরে মেয়েদেরকে বিয়ে দেওয়া মহিন উদ্দিনের ব্যবসা। ইতোমধ্যে বড় মেয়ে রলি আক্তারকে (২৬) তিন বিয়ে এবং ছোট মেয়ে সোহাগী আক্তার বীনাকে (২০) দুই বিয়ে দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়েছেন তিনি। এখন মেজো মেয়ের সংসার ভাঙ্গার পায়তারা করছেন।