ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক ভূমি অফিসের এক
কর্মচারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার ঘটনায় তিনদিন থেকে কলম বিরতী
কর্মসূচি পালন করছেন উপজেলার ভূমি অফিসের কর্তকর্তা-কর্মচারীরা। এতে
বিপাকে পড়েছেন ভূমি অফিসের কাজ করতে আসা ভূমি মালিকেরা।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে ভূমি অফিসে কাজ করতে এসে বছরের পর বছর ঘুরছে
ভুমি মালিকেরা। ভুমি অফিসে কাজ করতে আসা কয়েকজন ভুমি মালিক জানায়,
তারা এক একটি কাজের জন্য, ৬মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত ঘুরছেন।
জনাগেছে গত রবিবার দুপুর ২ টায়”খ”তপশিল ভুক্ত জমির ফাইল খুজাকে কেন্দ্রকরে
পৌর ভুমি অফিসের অফিস পিয়ন আমজাদ হোসেনকে শারিরিক ভাবে লাঞ্চিত করে
উপজেলার ৩নং কাজিহাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মানিক রতন। এই ঘটনার জের
ধরে ওই দিন (রবিবার) থেকে অফিসের সকল কাজকর্ম বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানের
বিচারের দাবীতে কলম বিরতী কর্মসুচি পালন করে আসছে উপজেলা ভুমি
অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পৌর ভুমি অফিসের তহশিলদার জাহিদ হোসেন বলেন, একটি ”খ” তপশিল ভুক্ত
জমির গত ২০১৫ সালের করা আবেদনের ফাইল খুজতে দায়িত্ব দেন পৌর ভুমি
অফিসের অফিস পিয়ন আমজাদ হোসেনকে। কিন্তু কয়েকদিন ধরে ফাইলটি খুজে
না পাওয়ায়, অফিস পিওন আমজাদ হোসেন পুনরায় আবেদন করার পরামর্শ দেন, এতে
চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মার ডাং চর-থাপ্পর দিয়ে শারিরিক ভাবে লাঞ্চিত করে।
সহকারী ভুমি কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন অরো বলেন, অফিস পিওন এর কোন
অপরাধ থাকলে, আমাকে কিংবা আমাদের কতৃপক্ষর নিকট চেয়ারম্যান সাহেব
অভিযোগ করতে পারতো, কিন্তু তিনি কোন অভিযোগ না করে তাকে শারিরিক
ভাবে লাঞ্চিত করায়, অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী লাঞ্চিত বোধ করছে এই
ঘটনার প্রতিবাদে তারা কলম বিরতী করে আসছেন।
এই বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মানিক রতন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি
বলেন, অফিস পিয়ন আমজাদ হোসেন একটি ফাইল খুজে বের করার জন্য কয়েক
মাস ঘুরার পর এক হাজার টাকা ঘুষ দাবী করায় তাকে গাল মন্দ করা হয়েছে। তিনি
আরো বলেন, ভুমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের দোষ ধামা-চাপা
দেয়ার জন্য কলম বিরতী করেছে।
এদিকে ভুমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলম বিরতীর কারনে আটকে
গেছে ভমি অফিসের স¦াভাবিক কাজ-কর্ম। এতে বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন
এলাকা থেকে ভুমি অফিসে কাজ করতে আসা ভুমি মালিকেরা।
গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা ভুমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিসের প্রধান ফটকে
তালা দিয়ে বাহিরে ঘুরা-ফিরা করছে ভুমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অফিসের বাহিরে অপেক্ষা করছেন ভুমি অফিসে কাজ করতে আসা ভুমি মালিকেরা।
ভুমি অফিসের বাহিরে অপেক্ষামান ভুমি মালিকেরা বলেন, গন্ডগোল করেছে
চেয়ারম্যাান কিন্তু শাস্তি পাচ্ছি আমরা। ভুমি মালিকেরা অভিযোগ করে বলেন,
তারা এক একটি কাজের জন্য ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত ঘুরছেন, এখন পর্যন্ত
তাদের কাজ হযনি। ভূমি অফিসে কাজ করতে আসা ভুমি মালিক খয়েরবাড়ী
ইউনিযনের সাবেক ইউপি সদস্য শাহাজাহান আলী বলেন, তিনি একটি খারিজের
আবেদন করে তিন মাস থেকে ঘুরছেন এখন পর্যন্ত তার খারিজটি হয়নি। ভুমি
অফিসে আসা হযরতপুর গ্রামের শাহাজামাল বলেন, তিনি একটি মিসকেস করে
গত দুই বছর থেকে আসছেন এখন পর্যন্ত তার মামলাটির আদেশ হযনি। প্রায়
একই প্রকার অভিযোগ করেন ভুমি অফিসের কাজ করতে আসা ভুমি মালিক চক-
সাহাবাজপুর গ্রামের মোস্তাক হোসেন, কাটাবাড়ী গ্রামের মনসুর আহম্মেদ,
সুজাপুর গ্রামের রোস্তম আলী ও কৃষ্ণপুর গ্রামের মাহবুব হোসেন।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম চৌধুরী’র সাথে
যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্ঠা করা হচ্ছে বলে
তিনি এড়িয়ে যান।