মোঃ অালী হাসান: পাঁচবিবি(জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ এক বছর পূর্বে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে এনএস অটো রাইস মিলে দুর্ঘটনায় আহত সোহেল(২০) এখন পাগলপ্রায়। সোহেল মহব্বতপুর গ্রামের আনসার আলীর ছেলে।জীবিকার তাগিদে
বাপ -ছেলে এক সাথে এনএস অটো রাইস মিলে দিন মজুরের কাজ করতো। মিলের টিনে কাজ করতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে
সোহেলের মাথা স্পর্শ লাগে।এতে সোহেল প্রাণে বেঁচে গেলেও সুচিকিৎসার অভাবে এখন পাগলপ্রায়।আহত সোহেলকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা
হলে মালিক পক্ষ ২ মাস চিকিৎসা খরচ বহন করে।এর পর আর খোঁজ খবর নেয়নি। আনছার আলী বলেন,দুর্ঘটনার পর মালিক পক্ষ আমার ছেলের চিকিৎসার গুরুত্ব দিতনা।এরই প্রেক্ষিতে এলাকার লোকজন এনএস অটোরাইস মিল ঘেরাও করে।তখন মালিক পক্ষ চিকিৎসা খরচ
থেকে শুরু করে পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বসে থেকে বেতন দেবার অঙ্গীকার করেছিল। সোহেল ২০১৭ সালের ৭ আগষ্ট থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্তু রংপুর মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।ওই সময় মালিক পক্ষ ওষুধ খরচ ও ১ ‘শ টাকা করে খাবার বাবদ দিয়েছিল।রংপুর থেকে রিলিজ দেবার পর কোন খোঁজ খবর নেয়নি।এলাকার লোকজনের সাহায্য ও ভিক্ষার টাকা দিয়ে চিকিৎসা করেছি।চিকিৎসা চালাতে শেষ সম্বল বিক্রি করে নিঃস্ব হয়েছি।বিবাহ যোগ্য মেয়েটা মানুষের
বাড়িতে গৃহপরিচারীকার কাজ করছে।এসব চিন্তায় মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে। মালিকের কাছে টাকা চাইতে গেলে
উল্টো বলে তোর ছেলের চিকিৎসায় অনেক খরচ করেছি সেই টাকা ঘুরে দে। এছাড়া অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
সরেজমিন মোহাব্বতপুরে আনছার আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পাগলপ্রায় সোহেল তার মা ও দাদীকে মারধর করেছে।
এরকম ছিলনা সোহেল।নম্র,ভদ্র ও লাজুক প্রকৃতির তরুণ সোহেল দুর্ঘটনার পর শারীরিক ও মানসীক ভাবে চরম অসুস্থ।
তার গলা,মাথা,ঘার ও দুইপায়ে দুর্ঘনার ক্ষত রয়েছে।পায়ের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে অঙ্গহানী ঘটেছে। আনছার আলী আক্ষেপ করে বলেন,গরীবের বিচার নাই। থানায় মামলা করতে চেয়েছিলাম। বিষয়টি জানতে পেরে মালিক আমাকে বলেছিল, মামলা করে কি করবি? তুই ২ টাকা খরচ করলে আমি ৫০ টাকা খরচ করব তবু তোকে টাকা দিব না।আনছার আলী
আইন শৃঙ্খলাবাহীনি,মানবাধীকার সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে এর প্রতিকার ও বিচার চেয়েছেন। পাঁচবিবি পৌর সভার কাউন্সিলর আনিসু রহমান বাচ্চু বলেন,দুর্ঘটনার পর চিকিৎসায় অবহেলা করায় আমি লোকজন নিয়ে অটোমিলে গেছিলাম। সোহেল পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্তু তারা খরচ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার পর মালিক পক্ষ আর কিছুই দেয়নি ।ছেলেটা পঙ্গু হয়ে গেছে।ভবিষ্যতে কোন কাজ কর্ম করতে পারবেনা।পরিবারটি খুব অসহায়।
এনএস অটোরাইস মিলের স্বত্তাধিকারী নবিবুল ইসলাম বলেন,সোহেল কবুতর ধরতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।সে স্থায়ী কর্মচারী নয়।তার পরও চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ করেছি।এক পর্যায়ে সাংবাদিককে চায়ের দাওয়াত দেন এবং দেখা করার জন্য পিড়াপীড়ি করেন।