মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দীর্ঘ ১৩ বছর পর আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে চাকুরী ফেরত পেলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আশুলিয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরিত্যক্ত চুল পুনরায় ব্যবহারের মাধ্যমে ভাগ্য বোনার চেষ্টা আদিতমারীর নারীদের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর হলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত সৌরভের অর্থের অভাবের চিকিৎসা হচ্ছে না। আশুলিয়া সাংবাদিক সমন্বয় ক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি’র সভাপতি হেলাল শেখকে প্রাণঢালা অভিনন্দন বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনের প্রাণহানি ধামরাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহতদের স্মরণে শোক সভা ও দোয়া 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২৩ ডিসেম্বর

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮
  • ২১৮ বার পড়া হয়েছে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২৩ ডিসেম্বর

অনলাইন ডেস্কঃ 

আগামী ২৩ ডিসেম্বর রোববার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।

সিইসি সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘জনগণের হয়ে সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের গণতন্ত্রের ধারা এবং উন্নয়নের গতিকে সচল রাখার আহ্বান জানাই।’ তিনি সব দলকে রাজনৈতিকসুলভ আচরণ করারও আহ্বান জানান। পোলিং এজেন্টরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আজ সন্ধ্যা ৭টায় এই ভাষণ সম্প্রচার শুরু হয়। সিইসি কে এম নুরুল হুদা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৯ নভেম্বর সোমবার। মনোনয়ন বাছাইয়ের শেষ তারিখ ২২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার। ২৩ ডিসেম্বর রোববার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনায় সিইসি দেশবাসী সবার সহযোগিতা চেয়ে বলেছেন, ‘দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় আপনাদের সহযোগিতা, সাহায্য এবং সমর্থন কামনা করি। জাতির আকুল আগ্রহের এই জায়গায় সকলকে সাথে নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সফল হব ইনশা আল্লাহ। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফল হোক-সার্থক হোক।’

কে এম নুরুল হুদা তাঁর ভাষণের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘যেসব বীর সন্তান স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, সম্ভ্রম বিসর্জন দিয়েছেন-তাঁদেরকে স্মরণ করছি। স্মরণ করছি ৫২-এর ভাষা শহীদদের-যাদের রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মায়ের ভাষা; অর্জিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।’

নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আমরা একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইন সংস্কার, ভোটার তালিকা প্রস্তুতসহ সাতটি করণীয় বিষয় স্থির করে ২০১৭ সালে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করেছিলাম। সংলাপের মাধ্যমে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক সংস্থা, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারীনেত্রী সংগঠনের কাছে কর্মপরিকল্পনাটি তুলে ধরেছিলাম। তাদের পরামর্শ এবং সুপারিশ বিচার-বিশ্লেষণের পর গ্রহণযোগ্য বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যেমন-কতিপয় আইন ও বিধি সংশোধন করেছি। সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রে বাছাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৭৫টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। কর্মকর্তাগণের সক্ষমতা অর্জন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। প্রথমবারের মতো পোলিং এজেন্টগণের প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে উল্লেখ করে কে এম নুরুল হুদা বলেন, ইতিমধ্যে নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। কমিশনারগণ সংবিধানের আলোকে সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করার শপথ নিয়েছেন এবং তাতে তারা নিবিষ্ট রয়েছেন। নির্বাচনী সামগ্রী ক্রয় এবং মুদ্রণের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে পারস্পরিক পরামর্শ আদান-প্রদান করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচনী দায়িত্বে নিবেদিত রয়েছেন। আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে মহামান্য রাষ্ট্রপতি অবহিত করেছি।

নির্বাচনে থাকবে সশস্ত্র বাহিনী

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় সাত লাখ কর্মকর্তা নিয়োগের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে ছয় লক্ষাধিক সদস্য মোতায়েন করা হবে। তাদের মধ্যে থাকবে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, কোস্ট গার্ড, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও একাগ্রতার ওপর বিশেষ দৃষ্টি রাখা হবে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হলে দায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নির্বাচন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বেসামরিক প্রশাসনকে যথা-প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ারের বিধানের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে।

অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে

দেশব্যাপী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে সিইসি বলেন, জাতির এমন উচ্ছ্বসিত প্রস্তুতি মধ্যখানে দাঁড়িয়ে আমি প্রত্যাশা করব, অনুরোধ করব এবং দাবি করব, প্রার্থী এবং তার সমর্থক নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি মেনে চলবেন। প্রত্যেক ভোটার অবাধে এবং স্বাধীন বিবেকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করবেন। স্ব স্ব এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং নির্বাচিত প্রতিনিধি ভোট কেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চতকরণে সহায়তা করবেন। পোলিং এজেন্টগণ ফলাফলের তালিকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। নির্বাচনী কর্মকর্তাগণ নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনে অটল থাকবেন। নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটগণ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভোটকেন্দ্র, ভোটার, প্রার্থী, নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। গণমাধ্যমকর্মী বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করবেন। পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা মেনে দায়িত্ব পালন করবেন। এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সামগ্রিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানের আওতায় রাখবে। এভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে।

রাজনীতিসুলভ আচরণের অনুরোধ

সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় জনগণের মালিকানার অধিকার প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়; নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্র তৈরি হয়। এমন নির্বাচনে দেশের সব রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণ করার জন্য আবারও আহ্বান জানাই। তাদের মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে মতানৈক্য বা মতবিরোধ থেকে থাকলে রাজনৈতিকভাবে তা মীমাংসা করার অনুরোধ জানাই। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে প্রার্থীদের সমর্থকদের সরব উপস্থিতিতে অনিয়ম প্রতিহত হয় বলে আমি বিশ্বাস করি। প্রতিযোগিতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন কখনো প্রতিহিংসা বা সহিংসতায় পরিণত না হয় রাজনৈতিকদলগুলোকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাই।’

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য শিগগিরই পরিপত্র

সিইসি বলেন, ‘ভোটার, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, প্রার্থী, প্রার্থীর সমর্থক এবং এজেন্ট যেন বিনা কারণে হয়রানির শিকার না হন বা মামলা মোকদ্দমার সম্মুখীন না হন তার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর কঠোর নির্দেশ থাকবে। দলমত নির্বিশেষে সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, ধর্ম, জাত, বর্ণ ও নারী পুরুষভেদে সকলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ভোট শেষে নিজ নিজ বাসস্থানে নিরাপদে অবস্থান করতে পারবেন। নির্বাচনী প্রচারণায় সকল প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ পাবে। সকলের জন্য অভিন্ন আচরণ ও সমান সুযোগ সৃষ্টির অনুকূলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। এসব নিয়ে শিগগিরই প্রয়োজনীয় পরিপত্র জারি করা হবে।’

ব্যবহার হবে ইভিএম

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘পুরাতন পদ্ধতির পাশাপাশি ভোটগ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অনেকগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহার সফল হয়েছে। জেলা এবং অঞ্চল পর্যায়ে প্রদর্শনীর মাধ্যমে ইভিএমের উপকারিতা সম্পর্কে ভোটারগণকে অবহিত করা হয়েছে। ইভিএম ব্যবহারে তাদের মধ্যে উৎসাহব্যঞ্জক আগ্রহ দেখা গিয়েছে।’

সিইসি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি ইভিএম ব্যবহার করা গেলে নির্বাচনের গুণগত মান উন্নত হবে এবং সময়, অর্থ ও শ্রমের সাশ্রয় হবে। সে কারণে শহরগুলোর সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা থেকে দ্বৈচয়ন প্রক্রিয়ায় বেছে নেওয়া অল্প কয়েকটিতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হবে।’

মনোনয়নপত্র অনলাইনেও

কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কমিশনের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রার্থীদের তথ্য ব্যবস্থাপনা এবং নির্বাচনের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি আদান-প্রদান পদ্ধতি সংক্রান্ত সফটওয়ার ও প্রোগ্রাম আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। সরাসরি অথবা অনলাইনেও মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধান রাখা হয়েছে।’

সিইসির ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ সব বেসরকারি টেলিভিশনে একযোগে সম্প্রচার করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451