ঢাকা: বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কবে নাগাদ দালালমুক্ত হবে জানতে চেয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (১০ জুন) সকালে রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বিআরটিএ’র কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের কাছে এ প্রশ্ন ছুড়েন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিএ’র কার্যক্রমে জনগণ কতটুকু উপকৃত হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। জনগণ সুবিধা না পেলে আমার সব পরিশ্রম পণ্ড হয়ে যাবে।
মন্ত্রী বলেন, জনগণ বিআরটিএ অফিসে গেলে দালালরাই বলে দেয় কার কাজ কখন হবে। কার ডিজিটাল প্লেট নম্বর কখন লাগানো হবে। অনেক কাজ করেছি তার কোনো ফলোআপ নেই।
সারাদেশ থেকে এখানে যারা এসেছেন তাদের কাছ থেকে সমস্যার কথা শোনা ও সমাধানে মতামত নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন মন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিএ’র ৬০শতাংশ এখন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আছে। বাকি ৪০ শতাংশ কতিপয় কর্মকর্তা ও দালালরা নিয়ন্ত্রণ করছে।
মোটরসাইকেলে দুইজনের বেশি হেলমেট ছাড়া চলাচল না করতে ও শিশুদের না উঠানোর কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, এ বিষয়ে জিরো টলারেন্সে থাকতে হবে। কোনো কম্প্রোমাইজড করা হবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ, মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় প্রবেশ করার পর ঢাকা শহরে অতিরিক্ত ছোট গাড়ির কারণে বিশ্বের মধ্যে বসবাসের অযোগ্য দেশের তালিকায় আমরা ১৩৯ তম।
উন্নয়নের সঙ্গে ঢাকা শহরের গাড়ির চেহারা দেখলে বোঝা যায় না। কারণ বিআরটিএ’র অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বাসায় গাড়ি রেখে বিআরটিএ থেকে ট্যাক্স টোকেন নিয়ে যাচ্ছে মালিকরা। এদিক থেকে মফস্বলের গাড়িগুলোর অবস্থা অনেক ভালো।
মন্ত্রী বলেন, ফুটপাত পথচারীদের ফিরিয়ে দিতে ও ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বড় বড় ফ্লাইওভার ও ইউলুপ কোনো সমাধান দিতে পারবে না।
তিনি বলেন, রাস্তার মূর্তিমান আতঙ্ক ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সা, নসিমন, করিমন বন্ধ করতে কারখানায় হানা দিতে হবে।
তেলের দাম ৫ টাকা বাড়লে ভাড়া ২-৩ গুন বেড়ে যায়। জনগণকে জিম্মি করে কারও সঙ্গে আপোষ করা হবে না বলেও জানান মন্ত্রী।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে আরো ৫ হাজার সিএনজি অটোরিক্সা আনার খবর প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, মালিক সমিতি সরকারের কাছে আবেদন করেছে। সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনে পাঠানো হয়েছে। তারা অনুমতি দিলে আমাদের কিছু করার থাকবে না।
তিনি বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে ঢাকার মিরপুর, ইকুরিয়া, চট্টগ্রাম ও সিলেটের কর্মকর্তাদের বদলি করা হলেও কয়েকদিন পর আবার চলে আসেন।
এসব জায়গা ছাড়াও অন্য স্থানে অনেক ভালো ও সৎ কর্মকর্তা আছে তাদের ঢাকায় আনার নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের বদলি করতে অনেক রাজনৈতিক কর্মী আমার কাছে তদ্বির করে। খোঁজ নিয়ে দেখেছি এর পেছনে দেনা পাওনার বিষয় আছে।
এসময় উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, কাজ করতে গিয়ে রাজনৈতিক চাপের শিকার হলে সরাসরি আমাকে ফোন করবেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সংস্থার কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরেন।
সভায় সারাদেশের অফিসে কর্মরত বিআরটিএর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।