অনলাইন ডেস্কঃ
দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর মুন্সীগঞ্জের সোহাগ ফকির (২০) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা জানিয়েছে, মোটরসাইকেল বিক্রির টাকার লোভে পরিকল্পিতভাবে সোহাগকে খুন করেন তার বন্ধুরা।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জে পিবিআইয়ের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমনটি দাবি করা হয়।
সোহাগ জেলার শ্রীনগর উপজেলার মধ্য কামারগাঁও গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম ফকিরের ছেলে। ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকদিন ধরে না ফেরায় তাঁর বাবা প্রথমে শ্রীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে তিনি সোহাগের বন্ধু অপু ও সিয়ামসহ নয়জনকে আসামি করে মুন্সীগঞ্জ আদালতে মামলা করেন।
শ্রীনগর থানা পুলিশ দীর্ঘ ১ বছর ৮ মাস পর তদন্ত করে অপু, পারভেজ ও সিয়ামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপরও সোহাগের কোনো সন্ধান না মিললে একপর্যায়ে তদন্তের ভার পিবিআইয়ের ওপর ন্যস্ত হয়। গত বছরের ৩০ জুন মামলার তদন্ত শুরু করেন পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হযরত আলী। নয় মাস তদন্ত করে চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেন তিনি।
পিবিআইয়ের দাবি, এ ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত পলাতক আসামি মো. সিয়ামকে (২৭) ঢাকার দোহার থেকে প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তারের পর পুরো ঘটনা জানা যায়।
মুন্সীগঞ্জের পিবিআইয়ের অস্থায়ী কার্যালয়ে কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি জানান, সোহাগের সঙ্গে আগে থেকেই বন্ধুত্ব ছিল সিয়ামের। এ ছাড়া অপর আসামি পারভেজের বোনের শ্বশুরবাড়ি শ্রীনগরের বালাসুর গ্রামে। সিয়াম ও সোহাগের সঙ্গে পারভেজের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোহাগের মোটরসাইকেল দিয়ে তাঁরা ঘোরাফেরা করতেন। সোহাগ তাঁর মোটরসাইকেলটি বিক্রি করতে চাইলে পারভেজ বলে তাঁর মামা সেটি কিনতে চান। সোহাগ ও সিয়াম মাওয়া ঘাটের ওপারে মোটরসাইকেল নিয়ে গেলে পারভেজের মামার দেখানো এক লোক ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে মোটরসাইকেলটি কিনে নিয়ে যান। এরপর পারভেজ সিয়াম ও সোহাগকে নিয়ে খুলনা বেড়াতে যান। খুলনায় পৌঁছে একটি হোটেলে রাতে থাকেন তাঁরা। পরদিন তাঁরা পারভেজের গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার টোলনা গ্রামে যান। সেখানে নয়ন, মুরাদ, আবিদ তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। এরপর তারা ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে সোহাগের কাছ থেকে মোটরসাইকেল বিক্রির টাকা ছিনিয়ে নিয়ে শ্বাসরোধ ও ছুরি দিয়ে পেটে বুকে আঘাত করে করে। হত্যার পর সোহাগের লাশ পাশের ডোবায় কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয়ন খুলনা এলাকার শীর্ষস্থানীয় তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। নয়ন বাকিতেও খুন করেন বলে জানান এই কর্মকর্তা। থানায় একাধিক মামলাও আছে তার বিরুদ্ধে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।