মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

বাংলাদেশের সঙ্গে রাখাইনকে যুক্ত করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় : প্রধানমন্ত্রী

বাসস
  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ জুলাই, ২০১৯
  • ৪০৫ বার পড়া হয়েছে

মিয়ানমারের রাখাইনকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার বিকেলে সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাসুদা ভাট্টির প্রশ্নের জবাবে এই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসম্যান বেন শ্যারন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকে বাংলাদেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। সুদানের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন যে সেখানে হলে এখানে হতে পারবে না কেন?

এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের এই অঞ্চলটায় আমরা একটু শান্তিপূর্ণভাবে থাকার চেষ্টা করছি। এখানেও তাদের আগুন লাগানোর প্রচেষ্টা। এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য না।’

‘আমাদের যে দেশটা আছে, ৫৪ হাজার বর্গমাইল বা ১ লাখ ৪৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার, আমরা তাতেই খুশি। অন্যের জমি আমাদের সঙ্গে নিয়ে আসা বা অন্যের কোনো প্রদেশ আমাদের সঙ্গে যুক্ত করাটা আমরা সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করি। এটা আমরা কখনোই নেব না। কারণ প্রত্যেক দেশ তার সার্বভৌমত্ব নিয়ে থাকবে। মিয়ানমার তার সার্বভৌমত্ব নিয়ে থাকবে। সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে তারা রাখাইন স্টেট জুড়ে দিতে চায় কেন? এই ধরনের কথা বলা অত্যন্ত অন্যায় কাজ, গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাখাইন স্টেটে প্রতিনিয়ত ঝামেলা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা জেনেবুঝে ওই ধরনের একটা গোলমেলে জিনিস আমাদের দেশের সঙ্গে যুক্ত করব কেন? এটা আমরা কখনোই করব না। আর তা ছাড়া আমার প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার। সেখানে যখন ঘটনা ঘটেছে, তারা যখন আশ্রয় চেয়েছে, মানবিক কারণে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। এর অর্থ এটা না যে তাদের রাষ্ট্রের একটা অংশ নিয়ে চলে আসব। এই মানসিকতা আমাদের নেই। এটা আমরা চাই না। প্রত্যেকটা দেশ সার্বভৌমত্ব নিয়ে থাকুক সেটাই আমি চাই।’

‘মিয়ানমার যাতে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়, কংগ্রেসম্যান শ্যারনের বরং এই কথাই বলা উচিত। সেটাই হবে মানবিক, যেসব মানবতা লঙ্ঘন হয়েছে তাদের সেটা দেখা উচিত। একটা দেশের মধ্যে গোলমাল পাকানো কোনোভাবেই ঠিক না। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যেখানেই হাত দিয়েছে আগুন জ্বলছে। কোথাও তো শান্তি আসেনি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়েছে এবং অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে’  বলেন প্রধামন্ত্রী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হতে পারে তারা খুব বড় দেশ, সেই দেশের কংগ্রেসম্যান। কিন্তু তারা তাদের অতীত ভুলে গেছে, যেখানে গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকত। সে অতীত তো তাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়। সেটা যে ভবিষ্যতেও আসবে না তারা সেটা কীভাবে ভাবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির সরকারকে সম্মত করতে চেষ্টা করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা উল্লেখ করে চীনের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চীন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুইবার মিয়ানমারে পাঠিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে তারা আবারও মন্ত্রীকে মিয়ানমারে পাঠাবে।’

চীন সফরের ফলাফল নিয়ে আজ সোমবার বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। সংবাদ সম্মেলনে চীন সফর নিয়ে লিখিত বক্তব্য পড়েন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

পাঁচ দিনের সফরে গত ১ জুলাই চীনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংসহ দেশটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তিনি। রোহিঙ্গারা যাতে শিগগিরই তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে পারে, সে জন্য এ সংকটের দ্রুত সমাধানের বিষয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে চীন।

ক্ষমতাসীন চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) জানিয়েছে, আপসে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য তারা মিয়ানমারের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা-সংক্রান্ত নয়টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে—রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার জন্য এলওসি (লেটার অব এক্সচেঞ্জ) এবং অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ, সংস্কৃতি এবং পর্যটন-সংক্রান্ত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক । এ ছাড়া চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের সঙ্গে দুটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ।

চীন সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে নাগরিক সংবর্ধনা এবং চীনা ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন। এ ছাড়া শেখ হাসিনা তিয়েনআনমেন স্কয়ারে হিরোস মেমোরিয়ালে চীনা বিপ্লবের বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এন

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451