অনলাইন ডেস্ক:
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। ডেঙ্গু রোধে গাফিলতি ও ব্যর্থতায় দায়ীদের চিহ্নিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে আনা হয়েছে মশা মারার নতুন ওষুধ ‘ডেল্টামেথরিন’। এই ওষুধ গত ২০ আগস্ট থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে ছিটানো হচ্ছে। এতে করে গত সপ্তাহের তুলনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও কমে আসছে।
আজ সোমবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। পরে মশক নিধনে ইনকোয়ারি কমিশন গঠন এবং আদালতে উপস্থাপিত প্রতিবেদনের ওপর আগামী বুধবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
এ সময় আদালত বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়। এ সময় ডেঙ্গু রোধে গাফিলতি ও ব্যর্থতায় দায়ীদের চিহ্নিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন আদালত।
আজ আদালতে প্রতিবেদনে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াসহ এ ধরনের অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে বলে হাইকোর্টে আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে, সারা দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমছে জানিয়ে আদালতে আলাদা প্রতিবেদন দাখিল করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম টিপু।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, “আদালতের নির্দেশে গত ১১ আগস্ট থেকে নতুন ওষুধ ছিটানো শুরু হয়েছে। ২০ আগস্ট থেকে ভারত থেকে আনা নতুন ওষুধ ‘ডেল্টামেথরিন’ ছিটানো শুরু করে। এতে করে গত কয়েক দিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় কমে এসেছে। আদালতের নির্দেশে প্রতিটি ওয়ার্ডে কতজন কাজ করছে, তার তালিকা দিয়েছি। দক্ষিণ সিটিতে মশক নিধনে ৪৭০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ওষুধ নিধনে কাজ করছে।”
আইনজীবী আরো বলেন, দক্ষিণ সিটির পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও আদালতে প্রতিবেদন পেশ করে। এসব প্রতিবেদনের ওপর শুনানি করে মশক নিধনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং ইনকোয়ারি কমিশন গঠনের বিষয়ে আগামী বুধবার আদেশ দেওয়া হবে।
আদালতে শুনানিকালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান বলেন, মশা নিধনে বিভিন্ন সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জনবল নিয়োগে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন ওষুধ এনে ব্যবহার করা হচ্ছে।
গত ২০ আগস্ট এডিস মশা নির্মূল ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের স্থায়ী পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। মশা নিধনের চলমান অভিযানে কোন ওয়ার্ডে কতজন কর্মী দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁরা কখন যাচ্ছেন এবং কী কাজ করছেন, তা বিস্তারিত জানাতে বলেছেন আদালত। এ ছাড়া হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর পরিসংখ্যানও জানাতে বলা হয়েছে।
ওই দিন আদালত বলেন, ‘সারা দেশে তো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। কমছে, সেটা পরিবেশের জন্য। ওষুধে কাজ হচ্ছে কি না, সেটা খোঁজ নিলেই বলা যাবে। আমরা দেখব, রোগী কমছে কি না। ডেঙ্গু প্রতিকারে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে, তাতে কেউ বাঁচছে না। যারা বেঁচে যাচ্ছে, তাদের আল্লাহই বাঁচাচ্ছেন।’