আজ বুধবার বিকেল ৫টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল বাবরি মসজিদের মামলার চূড়ান্ত শুনানি। তবে এক ঘণ্টা আগেই শেষ হলো বাবরি মসজিদ ভাঙা মামলার শুনানি। ৩৯ দিন টানা শুনানি শেষে আজ শুনানি সমাপ্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সে অনুসারে আজ শুনানি শেষ হলো।
তবে আজই রায় ঘোষণা করেনি সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। কমপক্ষে ২৩ দিন পর রায় শোনানো হবে বলে জানা গেছে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের পাঁচজন বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে আজ বুধবার মামলার শুরুতেই আরো সময় চাওয়া হয়। তখনই প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যথেষ্ট হয়েছে। আজ বিকেল ৫টার মধ্যেই শেষ করতে হবে শুনানি।
আজ হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে আরো শুনানি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। তবে আজই শুনানি শেষের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। গতকালই মামলার শুনানি চলাকালীন দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়েছিল। গতকালের শুনানি শেষেই বুধবার ‘শুনানি শেষে’র কথা বলেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে মামলার শেষ পর্বের শুনানি। প্রসঙ্গত, আগামী ১৭ নভেম্বর অবসর নিচ্ছেন প্রধান বিচারপতি গগৈ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তিনি অবসরে যাওয়ার আগেই এই মামলার রায় ঘোষণার তোড়জোর শুরু হয়েছে।
এদিকে শুনানি চলাকালীন চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শুনানি চলাকালীন বিতর্কিত জমির মানচিত্র ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। বিতর্কের সূত্রপাত হিন্দু মহাসভার আইনজীবীর প্রমাণ উপস্থাপন ঘিরে। রাম জন্মভূমির পক্ষে একটি বই পেশ করেন আইনজীবী বিকাশ সিং।
অভিযোগ উঠেছে, ওই বইয়ে বিতর্কিত জমির মানচিত্র ছিঁড়ে ফেলেন সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী। যার জেরে আদালতে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতিকে অন্য বিচারপতিদের নিয়ে ‘কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার’ হুমকি দিতে হয়।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি, গতকাল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে মধ্যস্থতা কমিটি। ২০১০ সালের এলাহাবাদ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে জমির দাবি প্রত্যাহার করতে রাজি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের একাংশ। এরই মধ্যে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে নতুন রিপোর্ট জমা দিয়েছেন সাবেক বিচারপতি খলিফুল্লা, ধর্মগুরু রবিশংকর প্রসাদ এবং বিশিষ্ট আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চুর তিন সদস্যের মধ্যস্থতা কমিটি।
এদিকে, দীপাবলিতে বিতর্কিত জমিতে ৫১০০ প্রদীপ জ্বালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তবে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। জেলাশাসকের নির্দেশে ওই এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এদিকে, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সদস্যদের আবেদনের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।