সৌদি আরবে কর্মরত ২ লাখ ২০ হাজার নারীর মধ্যে মাত্র ৫৩ জনের মৃতদেহ ফিরে এসেছে; যা খুবই নগণ্য বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর নিয়ে ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
সৌদি আরব থেকে নির্যাতিত হয়ে ফেরা নারীর সংখ্যা খুব বেশি নয় উল্লেখে করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাত্র ৮ হাজার নারী ফিরে এসেছেন যা খুবই নগন্য। তিনি বলেন, নারীরা দূতাবাসের শেল্টারহোমে অভিযোগ না করে দেশে এসে অত্যাচারের কথা বলেন।যদি সংখ্যা দেখেন তাহলে খুবই ছোট একটা সংখ্যা। ৯৯ শতাংশ নারী ম্যানেজ করে নিয়েছেন, দেশে তারাও টাকাও পাঠাচ্ছেন। অনেকে আন্দোলন করছেন নারীদের যাওয়া বন্ধ করে দেয়া, নারী যাওয়া বন্ধ করে দেয়া, আমি জানি না, নারীরা এটাকে কীভাবে দেখবেন। তাদের কাজের জায়গা কমিয়ে দিচ্ছেন, যারা (এনজিও) দাবি করছেন তাদের চাকরি দেবেন না বিদেশে। তারা কি চাকরি জোগার করে দেবেন ওইসব নারীদের? দেশে থাকলে কি ভালো চাকরি হবে তাদের, এমন প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী।
বিদেশে নারী গৃহকর্মী পাঠানো বন্ধের বিষয়েও এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে বিকাশমান অর্থনীতিতে পুরুষের পাশাপাশি অবদান রেখে চলেছেন বিপুল সংখ্যক নারী।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের তালিকায় নারীর অন্তর্ভুক্তি নিঃন্দেহে ছিল সুখকর। কিন্তু কয়েকবছর না যেতেই উল্টো চিত্র। উঠে আসছে গৃহকর্তাদের নির্যাতনের ভয়াবহ সব ঘটনা। বিশেষ করে তাদের ওপর যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় এখনই নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধের দাবি বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৬ লাখ নারী শ্রমিকের মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার কর্মরত আছেন সৌদিতে। এর মধ্যে মাত্র ৮ হাজারের ফিরে আসা এবং তাদের মধ্যে ৫৩ জন সেদেশে মারা যাওয়ার ঘটনা সংখ্যার হিসেবে বড় কিছু নয়।
বাংলাদেশ থেকে নারীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে যান না বলেই অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে মনে করেন মন্ত্রী।
আব্দুল মোমেন বলেন, কিছু কিছু নারী নিজেদের কারণে নির্যাতিত হয়। প্রথমে যাওয়ার পর ভাষাগত সমস্যায় পড়েন। মালিক উনাকে যে আদেশ করেন উনি (ওই নারী) বুঝতে পারেন না। আর চাহিদা মতো রান্না করতে না পারায় নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এ ধরনের বহু রকমের সমস্যা আছে।
আগামী ১৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বাংলাদেশে আমিরাতের ইকোনমিক জোন তৈরিসহ ৩টি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক হবে এ সফরে। এছাড়া আগামী ২২ নভেম্বর ইডেনের টেস্ট ম্যাচে অতিথি হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদি আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।