আজ প্রলয়ংকারী সিডর দিবস। আজ থেকে এক যুগ আগে উপকূলে আঘাত হানে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডর। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার। রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টায় ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে উপকূলে আছড়ে পরে সিডর নামক দানব বাতাস।
সিডরের ক্ষত কাটতে না কাটতে একযুগ পরে একই মাসে আবার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ঘাঁ। গত ১০ নভেম্বর উপকূলে আবার হানাদেয় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। সিডরে বাতাসের বেগ, প্রাণহানিসহ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের চেয়ে বুলবুলে ক্ষতির পরিমাণ একটু কম। তবুও বুলবুলের আঘাতে আবারো সর্বশান্ত উপকূল। প্রতিবছর নভেম্বর মাস এলেই উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসরত বাসিন্দাদের মনে আতঙ্ক বিরাজ করে। আর প্রতিবছর এই দিনটি মনে করিয়ে দেয় স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ভয়াবহতার স্মৃতি।
বরগুনার বামনা উপজেলার সফিপুর গ্রামের ষাটোর্ধ বিধবা সুশিলা রানী জানান, ঘূর্ণিঝড় সিডর আমার ঘরবাড়ি কেড়ে নিয়েছিলো। আবার বুলবুল আমার ঘর নিয়েছে।
গত ১০ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে বাড়ির পাশে রেইন্ট্রি গাছ উপড়ে পড়ে ঘরের ওপর। তার সম্বল ঘরটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। তিনি এই দুইটি ঝড়ের আঘাতে আজ নিঃস্ব।
শুধু সুশিলা রানীই নন সাম্প্রতিক বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আর একযুগ আগে সিডরের বরগুনার বামনা উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। সিডরে এ উপজেলায় ১৮ জনের প্রাণহানিসহ উকূলীয় বেড়িবাঁধগুলো বিধ্বস্ত হয়। চলতি বুলবুলে এ উপজেলার প্রায় ৩ শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত ও প্রায় ৩ হাজার ঘর আংশিক ক্ষতি হয়। এবার কোনো প্রাণ হানি না ঘটলেও কয়েক হাজার বনজ গাছ উপরে পড়ে। উপজেলার বেবাজিয়াখালী বেড়িবাঁধটি ভেঙে অনেক এলাকাপ্লাবিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বরিশাল আঞ্চলিক প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানায়, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরের সিডরে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার প্রায় ১৮০ কিলোমিটার বাঁধ সম্পূর্ণ ও এক হাজার ৪০০ কিলোমিটার বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় ছয় জেলার ৫২৭টি বাঁধের ৬৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার সম্পূর্ণ ও ৫ দশমিক ১৯ কিলোমিটার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।