আটক করা ৫৭ জন বাংলাভাষীকে আজ শনিবার পুশ ব্যাক করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে কর্ণাটকের রাজ্য সরকার। ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরু শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
৫৭ জন বাংলাভাষীকে স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার ট্রেনযোগে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। বেঙ্গালুরু পুলিশ কর্ণাটকের অনন্তপুর জেলা থেকে হাওড়াগামী একটি ট্রেনে তাঁদের তুলে দিয়েছে। ৫৭ জনকে ট্রেনের একটি বগিতে রাখা হয়েছে। বেঙ্গালুরু পুলিশের ৪০ সদস্যের একটি দলকে তাঁদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত করা হয়েছে। এ ৫৭ জনের মধ্যে ২২ জন পুরুষ, ২৫ জন নারী ও ১০টি শিশু। আটক করা লোকজনের অনেকেই বেঙ্গালুরু শহরে কাগজকুড়ানির কাজ করতেন। তাঁরা অনেক দিন ধরেই বেঙ্গালুরুতে বাস করছিলেন।
বেঙ্গালুরু পুলিশ দাবি করেছে, আটক ব্যক্তিরা সবাই বাংলাদেশি। তাঁদের কাছে ভারতের নাগরিকত্বের কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। এর আগে বেঙ্গালুরু পুলিশ প্রথম দফায় ৮২ জনকে বাংলাদেশে বিভিন্ন সীমান্ত পথে ফেরত পাঠিয়েছিল। বেঙ্গালুরু পুলিশ বলেছে, তারা এই ৫৭ জন বাংলাভাষীকে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার রেল পুলিশের হাতে তুলে দেবে। পুলিশ এঁদের ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তুলে দেবে। বিএসএফই তাঁদের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে। তবে কোন সীমান্ত দিয়ে তাঁদের পাঠানো হবে, তা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে বলা হয়, আটক করা ব্যক্তিদের বনগাঁ-বেনাপোল সীমান্ত দিয়েই ফেরত পাঠানো হবে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন। আনন্দবাজার পত্রিকাকে মানবাধিকারকর্মী রঞ্জিত সুর বলেছেন, ‘এটা ভয়াবহ ঘটনা। কর্ণাটক সরকার দেশের আইন, সংবিধান সব লঙ্ঘন করেছে।’
রঞ্জিত সুর প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কাউকে কি এভাবে পুশব্যাক করা যায় নাকি? কোনো মামলা নেই ওঁদের বিরুদ্ধে। পুলিশ কীভাবে নিশ্চিত হলো যে ধৃতরা বাংলাদেশি? এঁরা তো পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিও হতে পারেন। পুলিশকে এঁদের বাঙালি নির্ধারণের ক্ষমতা কে দিল? কোন আইনে এই নির্দেশ দেওয়া হলো? পুশব্যাকের আদেশ বা কে দিল? কোর্টের আদেশ ছাড়াতো কোনো পুশব্যাক করা যায় না?’ তিনি আরও বলেন, ‘কর্ণাটক সরকার ফেরত পাঠাচ্ছে , আর তাতে সাহায্য করছে বাংলার সরকার। আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে দাবি করছি পুশব্যাক বন্ধ করুন। আর বাংলার মানুষকে আবেদন করছি, এই পুশব্যাকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য।’