আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে দরিদ্রের জন্য বরাদ্দ করা সরকারি রিলিফের ঢেউ টিন পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত শের আলী মোল্লা গোপালগঞ্জের কার্শিয়ানী ফুকরা ইউনিয়নের সভাপতি। ফুকরা গ্রামে দরিদ্রের জন্য আদর্শ গ্রামের ঘর নির্মাণের পর বেঁচে যাওয়া ৩২টি টিন এই সভাপতি আত্মসাৎ করার জন্য তার বাড়িতে নিয়ে রাখেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
শুক্রবার বিকালে সরেজমিনে ফুকরা ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি শের আলী মোল্লার দক্ষিণ ফুকরার উত্তরপাড়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীকে টিন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তাদের বাড়িতে সরকারি টিন রয়েছে বলে স্বীকার করেন। টিনের গায়ে লেখা রয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, ত্রাণ সামগ্রী, বিক্রয়ের জন্য নহে।
ফুকরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শিকদার কাইউম হোসেন বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার ফোন পেয়ে শুক্রবার বিকালে শের আলী মোল্লার বাড়িতে আমি ছুটে যাই। সেখানে সাংবাদিকদের সামনে টিনগুলো গণনা করে ৩২টি টিন পাই। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আমি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে জানাই। টিনগুলো সরকারি ত্রাণের টিন বলে চেয়ারম্যান নিশ্চিত করেছেন। তবে কিভাবে এ টিন ওই নেতার বাড়িতে আসল তা তিনি জানাতে পারেননি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শের আলী মোল্লা বলেন, আমার শ্যালক মিরাজ খান জাহাজে চাকরি করেন। তার জায়গা আছে, কিন্তু ঘর নেই। তাকে আমি তদবির করে দু’ দফা রিলিফের টিন ও ১২ হাজার টাকা পাইয়ে দিয়েছি। তারা রিলিফের টিন এনে আমার ঘরে রেখেছে। এ টিন আদর্শ গ্রামের প্রকল্প থেকে বেঁচে যাওয়া টিন নয়। এলাকায় আমার সুনাম রয়েছে। আমার প্রতিপক্ষ প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই মিথ্যা টিন আত্মসাতের অভিযোগ করছেন।
কার্শিয়ঙই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ওই আওয়ামী লীগ নেতার শ্যালককে ২০১৬-১৭ ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দু’দফা রিলিফের টিন ও নগদ ১২ হাজার টাকা আমাদের অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে। প্রথম অর্থ বছরে মিরাজ খানের পক্ষে এক ব্যক্তি টিন ও টাকা উত্তোলন করেন। পরের অর্থ বছরে মিরাজ খান স্বাক্ষর করে টিন, টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান। ওই আওয়ামী লীগ নেতার ঘরে রক্ষিত টিন আমাদের বিতরণকৃত টিন কিনা তা তদন্ত করে দেখতে হবে।