রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য(ভিসি) অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান কোন কর্তৃত্ব বলে ভিসি পদে বহাল আছেন তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রাবির ভিসি, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব, শিক্ষা সচিবসহ আটজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। রাবির কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক ছাত্র সালমান ফিরোজ ফয়সালের করা এক রিট আবদেনে এ আদেশ দেন আদালত। রিট আবদেনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী ও মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। ভিসির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম(অ্যাটর্নি জেনারেল) ও মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ।
অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানকে গত ২০১৭ সালের ৭ মে দ্বিতীয় মেয়াদে চার বছরের জন্য ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ অবস্থায় ভিসি পদ থেকে অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানকে অপসারণের জন্য গত ১৫ মে আইনি নোটিশ দেন ওই শিক্ষার্থীর আইনজীবী। নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে এই নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১১(২) ধারা অনুযায়ী প্রথমেই কাউকে চারবছরের জন্য স্থায়ীভাবে নিয়োগের সুযোগ নেই। এই আইনের ১১(১) নম্বর ধারানুযায়ী প্রথমে তিনজনের একটি প্যানেল হবে। এই প্যানেলের মধ্য থেকে একজনকে ভিসি নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।
রিট আবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় মেয়াদে অধ্যাপক ড. এম. আব্দুস সোবহানকে নিয়োগ দেওয়ার দিনই তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর একইবছরের ২১ জুন তিনি উপাচার্যের পদে থেকেই ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন। আবার ওইদিনই তিনি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। ফলে উপাচার্যের পদে সাময়িক শূন্যতা সৃষ্টি হয়। উপাচার্য পদে সাময়িক শূন্যতা পূরণকল্পে রাষ্ট্রপতির অনুমতি ছাড়াই একদিনের জন্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আখতার ফারুককে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নিয়োগ দেন। যা ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের পরিপন্থি।
রিট আবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের ২১ জুন বিভাগে যোগদান ও স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণের তথ্য গোপন করে একইবছরের ২৪ জুন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে একটি আবেদন করেন। ওই আবেদনে ২৯ জুন স্বপদে যোগদান ও স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণের অনুমতি চাওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি এ আবেদন গ্রহণ করে তাকে যোগদান ও স্বেচ্ছা অবসরের অনুমতি দেন। অথচ আবেদনের আগেই তিনি যোগদান ও স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণ করেছেন। অবসরের পূর্ণ সুবিধা এককালীন পাওয়ার জন্যই এই কাজ করেছেন তিনি। কারণ ওই বছরের ১ জুলাইয়ের পর অবসর নিলে তিনি অবসরকালীন ৫০ শতাংশের বেশি টাকা একবারে উত্তোলন করতে পারতেন না।