রাজশাহী রয়্যালস তখন নেট সেশন শেষ করে হোটেলে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবার চোখ আন্দ্রে রাসেলের ওপর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকা বলে কথা। মনোযোগ তো কাড়বেনই। কিন্তু ক্যারিবীয় তারকা বেশিক্ষণ মনোযোগ কাড়তে পারলেন না। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ফটক দিয়ে হুড়মুড় করে ঢুকলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের খেলোয়াড়েরা। তাদের মাথায় বিজয় দিবসের ব্যান্ড। হাতে দেশের পতাকা। চট্টগ্রামের ইংলিশ কোচ পল নিক্সন তো মাথায় বিজয় দিবসের ব্যান্ড বেঁধে বড় একটা পতাকা নিয়ে ঢুকলেন মাঠে। সবার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘হ্যাপি ভিক্টরি ডে!’
সত্যি বলতে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স আসার আগ পর্যন্ত মাঠের পরিবেশে টের পাওয়া যায়নি আজ বিজয় দিবস। পুরোটাই ছিল ক্রিকেট আর ক্রিকেটময়। নেট অনুশীলনের ঠাস-ঠুস আওয়াজ ও খেলোয়াড়দের চিৎকার, ‘ওয়াচ দ্য বল!’ চট্টগ্রামের খেলোয়াড়েরা মাঠে ঢুকে পরিবেশটাই যেন বদলে দিলেন। একে তো এটা তাদের ঘরের মাঠ, এর সঙ্গে বিজয় দিবসের ব্যঞ্জনা ছড়িয়ে মাঠে ঢুকে মাহমুদউল্লাহরা অন্যরকম এক পরিবেশই সৃষ্টি করলেন। বিপিএলে বিজয় দিবসের আনন্দ ছড়াতে গোটা দল ও জাতীয় পতাকা নিয়ে ছবিও তুলেছে চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশের বিজয় দিবসের মাহাত্ম্য অজানা নয় চট্টগ্রাম কোচ নিক্সনের। নিজেদের উদ্যাপনের ব্যাখ্যা দিলেন, ‘এটা বিজয় দিবসের উদ্যাপন। বাংলাদেশে এবারই আমার প্রথম। এটা চ্যালেঞ্জার্সের ঘরের মাঠ। আরও জয় পাব, ইনশা আল্লাহ।’ এরপরই উঠে এল ক্রিকেট প্রসঙ্গ। বিপিএলে এ পর্যন্ত তিন ম্যাচ খেলে দুটিতে জিতেছে চট্টগ্রাম। ঘরের মাঠে বিপিএল-পর্বকে টুর্নামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় বলেই মনে করছেন নিক্সন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। ঘরের মাঠে আমাদের চারটি ম্যাচ আছে। সবগুলোই জিততে হবে। ছয় ম্যাচ জিতলে সম্ভবত কোয়ালিফাই করতে পারব। এখানকার উইকেট ভালো। আশা করি অনুশীলনটা ম্যাচে কাজে লাগানো যাবে।’
মাহমুদউল্লাহকে পাওয়ায় নিশ্চিতভাবেই শক্তি বেড়েছে চট্টগ্রামের। দলটির উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসানের মতে, ‘রিয়াদ ভাই দলে যোগ দেওয়ার পর আমরা আরও ভালো দল হিসেবে গড়ে উঠতে পেরেছি।’ মাথায় বিজয় দিবসের ব্যান্ড দেখিয়ে এ ক্রিকেটার জানালেন, আজ ম্যাচ থাকলে তিনি এ ব্যান্ড পরেই মাঠে নেমে যেতেন। এবার বিপিএলে দেশের ক্রিকেটাররা ভালো করছে বলেই মনে করেন নুরুল হাসান। যদিও নির্দিষ্ট করে কারও বললেন না তিনি, ‘শুরুতে যারা ব্যাট করার সুযোগ পাচ্ছে তারা একটু বেশি ভালো করছে। আসলে কেবল তো তিন-চারটি ম্যাচ হলো। কারও নাম উল্লেখ করার চেয়ে আমার মনে হয় সবাই ভালো করছে।’
বিজয় দিবসের ব্যতিক্রমী উদ্যাপনটা কার পরিকল্পনা, এ নিয়ে রহস্য ভাঙেননি নুরুল হাসান। বরং উদ্যাপনটাকেই বড় করে দেখছেন তিনি, ‘এটা আসলে আমাদের সবার জন্য বড় একটা পাওনা। বিদেশিরাও কিন্তু পতাকা নিয়ে মাঠে ঢুকছে। এটা আমাদের জন্য একটা বড় অনুভূতির ব্যাপার।’
কাল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিলেট থান্ডারের মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম।