বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশের গাছ কেটে সাবাড়

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ৩০৬ বার পড়া হয়েছে

উন্নয়নের নামে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশের গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। ডালপালা কাটার জন্য রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) থেকে চিঠি দেওয়া হলেও বন বিভাগ গাছ কেটে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তবে গাছ কাটার অভিযোগের বিষয়ে বন বিভাগ দাবি করেছে, ডালপালা কর্তনের কথা সওজ দ্বিতীয় দফার চিঠিতে বলেছে। প্রথম দফায় চিঠিতে গাছ কেটে ফেলার কথা বলেছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে গোয়ালন্দ সামাজিক বন বিভাগ গোয়ালন্দ রেলগেট থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে একাশিয়া, রেইনট্রি, বাবলা, শিশু, গামারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করে। উন্নয়নের কথা বলে বন বিভাগ প্রায় তিন বছর আগে মহাসড়কের পশ্চিম পাশের সব গাছ কেটে ফেলে। এবার মহাসড়কের পূর্ব পাশে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এখন চলছে কেটে ফেলা গাছ পরিবহনের কাজ। এ মহাসড়কের দুই পাশই বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।

গাছ কাটা কাজের তদারক করছেন মো. লিটন মোল্লা নামের এক ব্যক্তি। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি দাবি করে  গত ৭ অক্টোবর গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে বাংলাদেশ হ্যাচারি পর্যন্ত ৫০০ মিটারের মধ্যে থাকা গাছ বিক্রির দরপত্র আহ্বান করে ফরিদপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফরিদপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স টিটল এন্টারপ্রাইজ কার্যাদেশ পায়। কার্যাদেশে মোট ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকার বিপরীতে ৩৬৫টি গাছ কাটার কথা বলা হয়। নভেম্বর মাসের শেষ দিকে গাছ কাটা শুরু করেন তাঁরা।

চলতি সপ্তাহে সরেজমিনে দেখা যায়, ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক মহাসড়কের পাশে থাকা সব গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক গাছ এখনো অপরিপক্ব রয়েছে। শ্রমিকেরা গাছের গুঁড়ি কেটে মহাসড়কের পাশে স্তূপ করে রেখেছেন। কয়েকজনকে গাছ কাটায় ব্যস্ত দেখা গেল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন শ্রমিকদের কাজ তদারক করছেন।

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ৫০০ মিটার এলাকার এক পাশ থেকে ৩৬৫টি গাছ কাটা হয়েছে।

কয়েকজন পরিবহনচালক ও যাত্রী বলেন, মহাসড়কের পাশের সব গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলায় এখন সবকিছু খালি খালি লাগছে। অথচ ঘাটে প্রায়ই সমস্যার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। তখন সড়কের পাশে গাছপালার নিচে অনেকে বিশ্রাম নিতে পারতেন। এমনিতে গরমের সময় প্রখর রোদে মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে যায়। গাছপালা থাকলে তার ছায়ায় যানবাহন থাকলে যাত্রীরাও স্বস্তি পেতেন।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা বন কর্মকর্তা (ফরেস্টার) মীর সাইদুর রহমান জানান, ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজবাড়ী সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ফরিদপুরকে দেওয়া হয়। তাতে সড়ক উন্নয়নকাজের লক্ষ্যে বাংলাদেশ হ্যাচারি থেকে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ অপসারণের কথা বলা হয়। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বন বিভাগের কোনো গাছ আছে কি না, সরেজমিন তা পরিদর্শন করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ ফরেস্টারকে বলা হয়।

২২ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে রাজবাড়ী সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আশিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অপর একটি চিঠি পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে বসন্তপুর পর্যন্ত মহাসড়কের উভয় পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। সেসব গাছের ডালপালা মহাসড়কের ভেতর চলে আসায় যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। ডালপালায় সড়ক আচ্ছাদিত থাকায় বৃষ্টির পর পাতায় জমে থাকা পানি টিপটিপ করে সড়কে পড়ে, তাতে ফুটপাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে ও সড়কে যান চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে সড়কের ওই এলাকায় থাকা গাছের ডালপালা কাটা জরুরি। এ–সংক্রান্ত চিঠির আলোকে রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দের ফরেস্টারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২৪ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

প্রথমে গাছ এবং পরে ডালপালা কাটার বিষয়ে বনবিভাগকে চিঠি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সওজ রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী কে বি এম সাদ্দাম হোসেন গত শনিবার ‘আমরা মহাসড়কের ওই এলাকায় পশ্চিম পাশে ৫ ফুট করে বাড়াতে কিছু গাছ কাটতে বলেছিলাম। তার মানে এই নয় যে সমস্ত গাছ কাটতে বলা হয়েছে। আমরা তাঁদের পুনরায় গাছ রোপণের জন্য চিঠি দেব।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451