সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার একমাত্র সরকারি সার্বজনীন শ্মশানটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। দেশের প্রতিটি শ্মশানে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও পৌরসভার দাসগ্রামে অবস্থিত শ্মশানটি সংস্কার হয়নি বেশ কয়েক বছর ধরে। শতভাগ বিদ্যুতায়িত বিয়ানীবাজার উপজেলার এই গুরুত্বপূর্ণ শ্মশানটিতে নেই কোনো বৈদ্যুতিক কিংবা গ্যাসের চুল্লি। একটি পুকুর রয়েছে, সেটিও পরিত্যক্ত। ফলে চুল্লি ও পানি সংকট থাকায় ধর্মীয় কর্মকাণ্ডসহ শবদেহ দাহ করতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে শ্মশানটি অনেকটা পরিত্যক্ত এলাকায় পরিণত হয়েছে। সরকারি এ শ্মশানে নেই কোনো বৈদ্যুতিক কিংবা গ্যাসে চুল্লি। এতে বিভিন্ন স্থান থেকে লাকড়ি যোগাড় করে শবদেহ দাহ করার কাজ চালিয়ে নেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্মশানে একটি পুকুর থাকলেও সেটা দীর্ঘদিন থেকে সংস্কারবিহীন। আরাধনার জন্যে জরাজীর্ণ টিনশেডের ঘর থাকলেও শ্মশানে নেই কোনো শৌচাগার। তাছাড়া শ্মশানের পাশঘেঁষা ড্রেনেজ ব্যবস্থাও বেহাল। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করায় ময়লা-আবর্জনায় ড্রেনটি পূর্ণ রয়েছে। এতে দুর্গন্ধে শ্মশানে দাঁড়িয়ে থাকা দায় হয়ে পড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের।
এদিকে, ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ শ্মশানটি দীর্ঘদিন দিন ধরে সংস্কারবঞ্চিত থাকায় বৈদ্যুতিক কিংবা গ্যাসের চুল্লি স্থাপনসহ সার্বিক উন্নয়নে সহযোগিতা চেয়েছেন স্থানীয় সনাতন ধর্মের অনুসারীরা। তারা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে অল্পদিনেই বিলুপ্তি ঘটবে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেদের শেষ সময়ের শবদেহ দাহ করার এই স্থানটি।
স্থানীয় বাসিন্দা মিহির চন্দ্র বলেন, পৌর এলাকার স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শবদেহ দাহ করার একমাত্র স্থান এই শ্মশান। দেশের প্রতিটি শ্মশানে আধুনিকতা ছোঁয়া লাগলেও এটি বেশ কয়েক বছর ধরে যথাযথ সংস্কার হয়নি। এখনো সেই আদি যুগের চুল্লি দিয়ে কাজ চলাতে হয় আমাদের। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের গ্যাসের চুল্লি তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তাই সংশ্লিষ্টদের প্রতি শ্মশানটির উন্নয়নের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
পৌরসভার মেয়র মো. আব্দুস শুকুর বলেন, বর্তমানে শ্মশানের সংস্কারের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পক্ষ থেকে কোনো দাবি কেউ করেননি। তবুও উদ্যোগ নিয়ে শ্মশানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করা এবং সেখানে একটি সৌরবিদ্যুতের সোলার স্থাপন করেছি। পৌর মেয়র আরো বলেন, পৌর এলাকার একমাত্র সার্বজনীন এই শশ্মানটি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে এখানকার সনাতন ধর্মের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে শিগগিরই উদ্যোগ নেওয়া হবে।