ভিন্ন রকম বিয়ের বৌভাত। ওই বৌভাত অনুষ্ঠানের অতিথি গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত শিশু শিক্ষার্থীরা। অতিথি হয়ে অনুষ্ঠানে এসে তারা পেল নতুন জামা। এরপর আপ্যায়নের সময় নবদম্পত্তি নিজ হাতে তাদেরকে খাওয়ালেন। আপ্যায়নের মেনুতে তাদেরকে দেওয়া হলো ভাত, ডাল, মাংস, মিষ্টি ও কোমল পাণীয়। আতিথিয়তায় তুষ্ট শিশুরা প্রাণভরে গাইল বিয়ের গান। আনন্দঘন পরিবেশে তারা উপভোগ করল বৌভাতের অনুষ্ঠান।
স্বাস্থ্য বিধি মেনে রবিবার দুপুরে ব্যতিক্রমী ভিন্ন রকমের এই বৌভাত অনুষ্ঠিত হয় নীলফামারী জেলা সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের কোরাণীপাড়া আশা শিক্ষা কেন্দ্র চত্ত্বরে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেইফ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ওই নবদম্পত্তি আয়োজন করে অনুষ্ঠানটির।
জেলা শহরের শাহীপাড়ার এটিএম মোস্তফা চৌধুরীর ছেলে নিরাদ আল আশরাফি বিয়ে করেন গত ১৪ আগস্ট। আশরাফি একজন ফিল্ম মেকার। করোনা পরিস্থিতে স্বল্প পরিসরে পারিবারিক আয়োজনে বিয়ে করেন দিনাজপুরের সুইহারির ব্যবসায়ী লূৎফর রহমানের মেয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ফারজানা ইয়াসমিনকে। তারা বিয়ে করলেও বৌভাত অনুষ্ঠানের সুপ্ত বাসনা থেকে যায় তাদের মধ্যে। আর সেটি ভিন্ন আঙ্গিকে বাস্তায়নে পরিকল্পনা করতে থাকেন। তাতে সহযোগিতা করেন সেইফ ফাউন্ডেশন।
নিরাদ আল আশরাফি বলেন, ফিল্ম মেকারের কাজে আমি ঢাকায় ছিলাম। করোনা পরিস্থিতিতে আমি নীলফামারীর বাড়িতে অবস্থান করছি। করোনাকালে সেইফ ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন মানবিক কাজে সক্রিয় অংশ নেই। সেখান থেকেই আমার বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে অসহায় শিশু শিক্ষার্থীদের খাওয়ানোর চিন্তা আসে।
শিক্ষার্থীর সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন অভিভাবক মুক্তা বেগম। তিনিও আনন্দিত অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে। এসময় তিনি বলেন, এলাকায় শিশুদেরকে নিয়ে এমন অনুষ্ঠান আগে কখনো দেখিনি। প্রাণভরে বিয়ের অনুষ্ঠান উপভোগ করল শিশুরা।
নববধূ ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, ছোটবেলা থেকে শহরে মানুষ হয়েছি। গ্রামের শিশুদেরকে নিয়ে এমন একটি অনুষ্টানে অংশ নিতে পারবো তা কখেনো ভাবিনি। এটি আমার জীবনে মাইলফক হয়ে থাকবে।