সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফা এবং তাঁদের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রীর পক্ষে ৯ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা আকারে নথি জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
এইসময় পর্যন্ত দুই বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের কাছে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের প্রবেশ নিশ্চিতের। এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণের জন্য গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে ও দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুর গুলশান থানার ওসিকে নিয়ে হাইকোর্টে হাজিরের পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুই মেয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আঞ্জু কাপুরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান।
আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ৯ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন আদালত।
এর আগে আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টে হাজির হন সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফা। একইসঙ্গে হাইকোর্টে আসেন তাঁদের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আনজু কাপুর ও গুলশান থানার ওসি।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চের আদেশে আজ হাজির হন তাঁরা।
গত ২৬ অক্টোবর রাত সোয়া ৭টায় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আদেশে দুই বোনকে পুলিশ পাহারায় পৈতৃক বাড়িতে ঢোকার ব্যবস্থা নিতে গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
ওই নির্দেশ মেনে পুলিশ বিমানচালক মরহুম মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফাকে রাতেই রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরে (৯৫ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়ি) তাঁদের পৈতৃক বাড়িতে ঢোকার ব্যবস্থা করে। একই সঙ্গে তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।
এছাড়া ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ওই বাসায় দুই বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি গুলশান থানার ওসিসহ ৩ নভেম্বর দুই বোন এবং ওই বাড়িতে থাকা আঞ্জু কাপুরকে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়।
জানা যায়, সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ গত ১০ অক্টোবর মারা যান। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় ২০০৫ সালে। বড় মেয়ে মুশফিকা লেখাপড়ার জন্য ২০১৩ সালে দেশ ছাড়েন। মোবাশ্বেরা বিয়ের পর আমেরিকা চলে যান।
ফলে মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ একা হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ভারতের বেঙ্গালুরের মেয়ে আঞ্জু কাপুরের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই সূত্র ধরে ২০১৩ সালে তাঁদের বিয়ে হয় বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওয়াজি উল্লাহ।
মুশফিকা ও মোবাশ্বেরার অভিযোগ ছিল, তাঁরা গত ২৪ অক্টোবর সকাল থেকে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু তাঁদের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।