যুক্তরাজ্যে আজ মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো শুরু হতে যাচ্ছে মহামারি করোনাভাইরাসের অনুমোদিত টিকার প্রয়োগ। গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য সরকার যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও জার্মানির জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেকের যৌথভাবে তৈরি টিকার অনুমোদন দেয়। আজকের দিনটিকে ‘ভি-ডে’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন দেশটি। বিবিসির খবরে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে আছেন দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ ছাড়া ৮০ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ ও কেয়ার হোমের কর্মীরাও এ টিকা পাবেন। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা মঙ্গলবার সকাল থেকে টিকাদান শুরু করবেন। প্রথম টিকা দেওয়ার তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে এবং প্রত্যেককে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
তবে টিকা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ না চাইলে তাকে এটি দেওয়া হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আজ বড়ো পদক্ষেপ নেওয়ার দিন। তবে শীতে যেসব কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে যার যার এলাকায় সেসব মানতে হবে। হাত ধোয়া, মুখ ঢেকে রাখা ও দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে।’
প্রায় ৭০টি হাসপাতাল কেন্দ্রে টিকা পৌঁছে গেছে বলে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (এনএইচএস) ডেপুটি চিফ এক্সিকিউটিভ স্যাফরন করডারি। তিনি বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক আছে।’
তবে টিকার সংরক্ষণ নিয়ে কিছুটা অসুবিধা রয়েছে। অন্তত মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় টিকার ডোজগুলো সংরক্ষণ করতে হয়। একসঙ্গে ৯৭৫ ডোজ রাখতে হয়। এর কম ইউনিটে এখনও ভাগ করা যায়নি।
যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডে মঙ্গলবার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। তবে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ঠিক কোনদিন শুরু করবে তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি।
ফাইজার ও বায়োএনটেকের আট লাখ ডোজ টিকা হাতে পেয়েছে যুক্তরাজ্য। তবে চার কোটি ডোজ অর্ডার দিয়ে রেখেছে দেশটি। দুই কোটি মানুষকে দেওয়া যাবে এই টিকা। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকাকেও বিপুল সংখ্যক টিকার অর্ডার দেওয়া আছে দেশটির। তবে এটি এখনও চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি।
দেশটির সরকারি তথ্য মতে, এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শীতের সময়টা নিয়ম মেনে চললে আগামী ইস্টার অর্থাৎ এপ্রিল নাগাদ কড়াকড়ি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া সম্ভব হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সরকার।