নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য নয়, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি আরো বলেন, ‘অপরাজনীতির জন্যই জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’
নওগাঁর মান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আজ শনিবার সকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মেলনে যুক্ত হন।
সরকার দেশকে বিরোধী দলহীন করার চেষ্টা করছে—বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রের অব্যাহত এগিয়ে যাওয়ার পথ আরো মজবুত করতে সরকার শক্তিশালী এবং দায়িত্বশীল বিরোধী দল চায়।’
শেখ হাসিনার সরকার সমালোচনায় ভয় পায় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানান। অপরাজনীতির জন্যই জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মাধ্যমে বিএনপি প্রকারান্তরে নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়াল মারছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশে এখন দুর্দিন নেই, ভয়াবহ দুর্দিন চলছে আপনাদের (বিএনপির) রাজনীতিতে। বিএনপির রাজনৈতিক মনস্তত্ব এখন দুর্দশাগ্রস্ত।’
সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশের মানুষ ও অর্থনীতি করোনার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, অর্জন করেছে ঈর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি। গ্রাম থেকে শহরের প্রতিটি সেক্টরে শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন দৃশ্যমান।’
ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘হাতের তালু দিয়ে আকাশ ঢাকার অপচেষ্টা না করে বাস্তবতা মেনে ও দেশের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশে কোনো একদলীয় শাসনব্যবস্থা নেই, আছে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা, আছে কার্যকর সংসদ। অথচ বিএনপির মহাসচিব তথাকথিত একদলীয় শাসনের অবসান ঘটাতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি উন্নয়ন ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকেই ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি এখন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির সঙ্গে গোপন সখ্য গড়ে তুলে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে।’
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘এ দেশে যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়, তখনো বিএনপি প্রকাশ্যে একটি বাক্য বলারও সাহস দেখাতে পারে না। অথচ তারা বলে দলে নাকি মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেশি।’
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিদ্রোহীদের মনোনয়ন দিলে তারা প্রশ্রয় পেয়ে যাবে। দলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে, তাই এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ অনেক কঠোর। দল করতে হলে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।’
সেতুমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করে বলেন, ‘মুজিববর্ষের মধ্যেই সারা বাংলাদেশের পাড়ায়-মহল্লায় শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। গোটা বাংলাদেশ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে।’
মান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সংসদ সদস্য এমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার প্রমুখ।