বাংলাদেশ উপকূলের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে ভারতের উত্তর ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়া ‘ইয়াস’। স্থলভাগের আরও কাছে পৌঁছে গেছে এটি। সমুদ্র আরও উত্তাল হয়ে উঠেছে।
আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া বুলেটিনে বলা হয়েছে, ‘ইয়াস’-এর কেন্দ্রস্থল ওড়িশার ধামরা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার পূর্বে রয়েছে। পারাদ্বীপ থেকে ৯০ কিলোমিটার পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বে রয়েছে।
এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি। এটি দুপুরের দিকে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। পশ্চিমবঙ্গ সরকার নাগরিকদের দুপুর পর্যন্ত বাড়িতেই থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুধবার ভোর ৪টায় দেওয়া ১৫ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০৫ দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
অতি প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার দুপুর নাগাদ উত্তর ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এর আগে দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বুধবার ইয়াস উপকূলে আঘাত হানার সময় দেশের ১৪টি উপকূলীয় জেলা এবং চর ও দ্বীপে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এলাকাগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এ পূর্বাভাস দিয়ে দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে এর মধ্যে উপকূলের জেলাগুলোতে অস্বাভাবিক জোয়ারের চাপে পানি বাড়ছে। এ কারণে প্লাবিত হচ্ছে উপকূলের অসংখ্য গ্রাম। বয়ে যাচ্ছে ঝোড়ো বাতাস।
খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনার নিচু এলাকা এবং চরাঞ্চলগুলোতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ টপকে ও ভেঙে ওই পানি প্রবেশ করছে। সুন্দরবনের দুবলার চরসহ জেলেপল্লীগুলোর বেশির ভাগ এলাকা এরই মধ্যে ডুবে গেছে।