রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

টিকটকের ফাঁদে ফেলে কয়েকজন তরুণীকে ভারতে পাচার

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৯ মে, ২০২১
  • ১৯২ বার পড়া হয়েছে

টিকটক ভিডিও তৈরির ফাঁদে ফেলে তরুণীদের ভারতে পাচার করা হচ্ছে। সম্প্রতি ভারতে কয়েকজন মিলে এক বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টির অনুসন্ধানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

ওই তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় রিফাদুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় নামে ঢাকার মগবাজার এলাকার এক বাসিন্দাকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। এই রিফাদুলই মেয়েটিকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর কথা বলে বছরখানেক আগে ভারতে নিয়ে যান বলে তাঁর পরিবার জানিয়েছে।

ঢাকায় পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা  জানান, রিফাদুল (২৬) টিকটক ভিডিও বানানোর ফাঁদে ফেলে আরও কয়েকজন তরুণীকে ভারতে পাচার করেছেন বলে তাঁরা তথ্য পেয়েছেন। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা রিফাদুল ঢাকার উত্তরা, খিলগাঁও ও হাতিরঝিলে মেয়েদের নিয়ে টিকটক ভিডিও তৈরি করতেন। বাসার কাছের হাতিরঝিলেই ভিডিও বানাতেন বেশি। এভাবে মেয়েদের ফাঁদে ফেলে মানব পাচারকারী চক্রের যোগসাজশে ভারতে পাচার করতেন। প্রাথমিকভাবে ঢাকার কয়েকজন তরুণীকে ভারতে পাচার করার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

সম্প্রতি তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ভিডিওতে দেখা যাওয়া পাঁচজনের ছবি প্রকাশ করে তাঁদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে পুরস্কারের ঘোষণা দেয় ভারতের আসাম পুলিশ। পরে গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় দুই নারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে বেঙ্গালুরু পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের মামলা হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রিফাদুল ছাড়াও কয়েকজন বাংলাদেশি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বেঙ্গালুরু পুলিশের বরাতে এনডিটিভির খবরে বলা হয়, শুক্রবার ভোররাতে আসামিদের ঘটনাস্থলে নিয়ে গেলে দুজন পালানোর চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ গুলি ছুড়লে দুজন আহত হন। তাঁদের একজন রিফাদুল ওরফে টিকটক হৃদয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ  বলেন, ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশের সাইবার প্যাট্রোলিং দলের সদস্যরা রিফাদুলের ফেসবুক আইডি শনাক্ত করে নির্যাতনকারী যুবকের সঙ্গে তাঁর চেহারার মিল খুঁজে পান। পরে তাঁর মা ও মামাকে এনে হোয়াটসঅ্যাপে রিফাদুলের সঙ্গে কথা বলানো হয়। সেখানে একপর্যায়ে মেয়েটিকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেন রিফাদুল। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মেয়েটির পরিবারের সন্ধান পায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার মেয়েটির (২২) বাবা হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন।

পেশায় শরবত বিক্রেতা মেয়েটির বাবা জানান, তাঁর মেয়েকে কয়েক বছর আগে বিয়ে দেন। প্রায় সাড়ে তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে তাঁর। আড়াই বছর ধরে কুয়েতপ্রবাসী জামাতা মেয়ের খোঁজখবরও নিচ্ছিলেন না। বছরখানেক আগে হঠাৎ করে মেয়ের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না। কিছুদিন আগে জানতে পারেন, মগবাজার এলাকার তাঁর কথিত বন্ধু হৃদয় (রিফাদুল) বিদেশে পাঠানোর কথা বলে তাঁকে ভারতে নিয়ে গেছেন। ভিডিও ছড়ানোর পর আশপাশের মানুষের কাছে মেয়ের এ অবস্থা জানতে পারেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল ব্যুরোর সহকারী মহাপরিদর্শক মো. মহিউল ইসলাম বলেন, তাঁরা এ বিষয়ে বেঙ্গালুরু পুলিশের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। ভুক্তভোগী মেয়েটি এবং রিফাদুলসহ অন্য আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।

ভারতীয় পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নির্যাতনকারী চক্রের এক সদস্য তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করেন। পরে ওই ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। অপরাধীদের তথ্য পেতে আসাম পুলিশ টুইটারে তাদের ছবি পোস্ট করে।

একপর্যায়ে বেঙ্গালুরুর একটি মোবাইল ফোন থেকে ভিডিওটি ছড়ানোর বিষয়ে নিশ্চিত হন ভারতীয় তদন্তকারীরা। এরপর বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশকে সতর্ক করা হয়। তখন তাদের একটি বিশেষ দল কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নির্যাতনকারীদের শনাক্ত করে। তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বেঙ্গালুরু শহরের একটি ভাড়া বাসা থেকে।

কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসাবারাজ বমাই বলেছেন, এই চক্রে আরও কয়েকজন জড়িত বলে গ্রেপ্তাররা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁরা সবাই মানব পাচার চক্রের সদস্য বলেও স্বীকার করেছেন।

ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এ ঘটনার বিষয়ে সব রাজ্যকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এক টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘বেঙ্গালুরু পুলিশ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই চক্রকে শনাক্ত করেছে এবং দুই নারীসহ তাঁদের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা বলেছেন, এর পেছনে আরও লোকজন রয়েছে এবং তাঁরা কেরালায় আছেন। আমরা তদন্ত জোরদার করছি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451