দুই ভাগে বিভক্ত শংকর মাধবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-১ ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বপাড়ে বিলপাড়ায় রাখা ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির রায় বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে রাজীবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের শংকর মাধবপুর বিলপাড়া নামক এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ তিন শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
ঘণ্টাব্যাপী চলা এ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মিনারা খাতুন, কোদালকাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা মাইদুল ইসলাম, শিক্ষার্থী অভিভাবক মোকলেছুর রহমান, আবু বক্কর সিদ্দিক, হাজেরা খাতুন, বাছিরন নেছা, জাহানারা খাতুন, আব্দুল আলিম প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকায় শংকর মাধবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-১ ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বপাড়ের বিলপাড়ায় স্থানান্তর করতে গত ১৩ মার্চ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন প্রধানশিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম। এতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের লিখিত সুপারিশও নেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই গত ৮ এপ্রিল রাতের অন্ধকারে বিদ্যালয়ের ঘর ভেঙে নিজ এলাকা উপজেলার মহনগঞ্জ ইউনিয়নের তারাবর মৌজার ভেলামারীতে নেন প্রধানশিক্ষক। এ নিয়ে গত ৯ এপ্রিল ওই বিদ্যালয়ের সকল সহকারী শিক্ষক মিলে প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অভিযোগের সত্যতাও পায় তদন্ত কমিটি। এ ছাড়াও গত ১৫ জুন উপজেলা শিক্ষা কমিটি বিদ্যালয়টি ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বপাড়ের বিলপাড়ায় রাখতে লিখিত নির্দেশও দেন। এ নির্দেশ অমান্য করে ওই প্রধানশিক্ষক ব্রহ্মপুত্রের পশ্চিমপাড়ে ভেলামারীতে ১৩-১৪ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে একাই পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজের অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতে তিনি স্ত্রী ফারজানা খাতুনকে নিজ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি বানিয়েছেন।
উপস্থিত বক্তারা প্রধানশিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলামের অপসারণের দাবিসহ বিদ্যালয়টি জনবহুল এলাকা কোদালকাটির শংকর মাধবপুরের বিলপাড়ায় রাখতে উপজেলা শিক্ষা কমিটির রায় বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক রফিকুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রাজীবপুর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, গত ১৫ জুন উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে এই বিদ্যালয়টি ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বপাড়ের বিলপাড়ায় থাকবে। এ হিসেবে বলা যায়, বিদ্যালয়টি পূর্বপাড়েই আছে। এখনো এটি বলবৎ আছে। পরবর্তিতে কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন এখানে (পূর্বপাড়ে) রাখা দরকার এখানে রাখবেন।
ব্রহ্মপুত্রের পূর্বপাড়ে বিলপাড়ায় অবস্থিত ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারের দেওয়া পুষ্টিকর বিস্কুট থেকে বঞ্চিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।