সাভারে অভিযান চালিয়ে সহযোগী মেয়েসহ এক ভন্ড তান্ত্রিক গুরু মাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ মানুষের অন্ধবিশ্বাসকে পুজি করে তান্ত্রিক পরিচয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণার করে আসছিলো।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ (বিপ্লব)।
এর আগে সোমবার (৩ এপ্রিল) রাতে সাভার পৌর এলাকার অমরপুর থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাকৃতরা হলো- সাভারের ছোট অমরপুর এলাকার বেদে পল্লীর বাসিন্দা তোরাব আলীর স্ত্রী মোসাঃ আসমানী বেগম ওরফে শীতা রানী (৭০) ও তাদের মেয়ে মোসাঃ শিউলি বেগম (৪০)।
ডিবি পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তির পারিবারিক সমস্যা চলতে ছিল৷ তিনি গত ১০ অক্টোবর মহাখালী বাজার মোড়ের ওয়ালে একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পায়। যেখানে লেখা ছিলো “এখানে সকল সমস্যার সমাধান করা হয়”। নিচে একটি মোবাইল নাম্বার দেয়া ছিলো।
পরে ওই ব্যাক্তি উক্ত মোবাইল নাম্বারে ফোন দিয়ে তাহার সকল সমস্যা বললে ফোনের অপর পাশে থাকা ব্যক্তি তাহাকে আশ্বস্ত করে যে উক্ত ব্যক্তি একজন তান্ত্রিক, তিনি সাভারের অমরপুরে থাকে এবং তিনি বহুদিন যাবত এমন সমস্যার সমাধান করে এসেছেন। কিন্তু উক্ত সমস্যা সমাধান করতে হলে তাহাকে (প্রভাত) টাকা খরচ করতে হবে। তাদের আশ্বাসে অন্ধবিশ্বাসে বিভিন্ন তারিখে তাদেরকে সর্বমোট ৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ২৫০ টাকা প্রদান করে।
এরপরে দীর্ঘদিন পার হলেও উক্ত তান্ত্রিক তার কোন সমস্যা সমাধান না করে ভুক্তভোগীকে হুমকি ধামকি প্রদান করে এবং মহিষ কেনার কথা বলে আরও ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা দাবী করে। পরবর্তীতে বাদী এই প্রতারনা বুঝতে পেরে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ডিবি পুলিশ আরও জানায়, মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরবর্তীতে ঢাকা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মো: আসাদুজ্জামান- পিপিএম (বার) স্যার মামলাটির তদন্তভার ডিবি উত্তর ঢাকাকে প্রদান করলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিবি, জনাব মোবাশ্শিরা হাবিব খান, পিপিএম-সেবা মহোদয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা ডিবি পুলিশের ওসি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ (বিপ্লব) এর নেতৃত্বে গতকাল রাতে সাভারের অমরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভন্ড তান্ত্রিক গুরু মা সহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ (বিপ্লব) বলেন, গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা মামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। উক্ত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। সেই সাথে উক্ত ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তার তদন্ত অব্যাহত আছে বলেও তিনি জানান।