আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা অংশে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার (৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ। দুপুর ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় উভয়মুখী লেনে যান চলাচল বন্ধ থাকতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে মুখোমুখি অবস্থান নেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
এ সময় নেতাকর্মীদের হাতে লাঠিসোঁটা ও রামদা-ছেনি দেখা গেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চৌদ্দগ্রাম বাজারের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেটে মহাসড়কের ওপর নেতাকর্মীরা অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সেখানে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের মাঠে দেখা গেছে।
এ ছাড়া চৌদ্দগ্রাম বিসিক গেট এলাকায় একটি মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে এবং জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় সাবেক রেলমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের বিরোধী আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ। এক সপ্তাহ আগে ঘোষিত এ কর্মসূচির নেতৃত্বে আছেন আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য এম তমিজ উদ্দিন ভূঁইয়া সেলিম, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। একপর্যায়ে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুজিবুল হকের অনুসারীরা।
এতেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য এম তমিজ উদ্দিন ভূঁইয়া সেলিম বলেন, অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার সময় আমার ওপর হামলা চালিয়েছে তারা। আমরা এক সপ্তাহ আগে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি, আমাদের প্রতিহত করতে তারা এই পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আমি মনে করি, তারা জামায়াতের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এটা করেছে।
চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ধাওয়ায় তারা পালিয়ে গেছে চৌদ্দগ্রাম বাজার থেকে।
তারাই পথে পথে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে আমাদের কর্মসূচি বানচালের চক্রান্ত করেছে।এ প্রসঙ্গে জানতে মুজিবুল হকের অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লা বাবুলকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তারা জামায়াত-শিবিরের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করছে। চৌদ্দগ্রামের মানুষ তাদের প্রতিহত করেছে। চৌদ্দগ্রামে মুজিবুল হকের বিকল্প নেই।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, এরই মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ কাজ করছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।