লক্ষ্মীপুর শহরের একটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে গেছে। এ সময় ডাকাতদের হামলায় দোকান মালিকসহ চারজন আহত হয়েছেন। ডাকাতি শেষে মুখোশধারী ডাকাত দল ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পিকআপচাপায় এক পথচারী নিহত ও দুজন আহত হন।
বুধবার (৭ জুন) রাত সাড়ে ৮টায় শহরের বাজার সড়কের আর কে স্বর্ণ শিল্পালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ধাওয়া করে দুই ডাকাতকে আটক করেছে এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত পিকআপটি জব্দ করেছে। জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আহত দোকান মালিকের নাম অপু কর্মকার। আহত অপর তিনজনের মধ্যে একজনের নাম জানা গেছে। তিনি হলেন অপু কর্মকারের ছেলে অমিত কর্মকার। বাকিদের নাম জানা যায়নি। আর পিকআপচাপায় হতাহতদের নাম জানা যায়নি।
আহত অমিত কর্মকার জানান, সাড়ে ৮টার দিকে পিকআপে করে ৭-৮ জনের মুখোশধারী অস্ত্রধারী ডাকাতদল দোকানের সামনের সড়কে গাড়ি থামিয়ে দোকানে ঢুকেই স্বর্ণালংকার-নগদ টাকা লুট করতে থাকে। এ সময় বাধা দিলে ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তার বাবা ও তাকে কুপিয়ে আহত করে। তাদের চিৎকারে পাশের ব্যবসায়ীরা ছুটে এলে ডাকাতরা কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুমূর্ষু অবস্থায় অপু কর্মকারকে ঢাকায় পাঠায়।
লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। সেখান থেকে কয়েকটি তাজা ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ। ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের বহনকারী দ্রুতগামী পিকআপ শহরের ইটেরপুল এলাকায় পথচারীদের চাপা দেয়। এতে এক পথচারী ঘটনাস্থলেই মারা যান। আরও দুই পথচারী আহত হন। তাদের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি। পরে পুলিশ ধাওয়া করে দুই ডাকাতসহ ডাকাতিতে ব্যবহৃত পিকআপ আটক করতে সক্ষম হয়। আটকরা থানা হেফাজতে রয়েছে। মরদেহ সদর হাসপাতালে রয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত করে জড়িত সবাইকে আটক করার চেষ্টায় রয়েছে পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর শহরজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জেলা স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হরিহর পাল জানান, আকস্মিক ডাকাতির এ ঘটনা উদ্বেগজনক। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অনতিবিলম্বে ঘটনায় জড়িতদের আটক করা না হলে বিক্ষোভসহ কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন ব্যবসায়ীরা।