আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলার দুই পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৩ জুন) দিবাগত রাত ১টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার কালুহাটি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলো উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি এলাকার মৃত হাবিল উদ্দিনের ছেলে মফিজ উদ্দিন (৭৫) ও একই এলাকার মৃত মকসেদ আলী খোরার ছেলে খেতাব আলী ঘরামি (৮০)।
শনিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে চারঘাট মডেল থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি মফিজ উদ্দিন ও খেতাবকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা রুজুর পর থেকে দীর্ঘ ১৭ বছর থেকে তারা আত্মগোপনে ছিলেন।
মাসুদ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে খেতাব এলাকায় কুখ্যাত রাজাকার হিসেবে পরিচিত এবং ১৯৭১ সালে চারঘাট থানা সংলগ্ন এলাকায় গণহত্যার দায়ের অভিযুক্ত। আসামিদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসপি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন চারঘাট থানা ও এর আশপাশের এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগিতায় গ্রেপ্তার আসামিরা স্থানীয় আওয়ামী নেতাকর্মীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল। সেই সঙ্গে মুক্তিকামী মানুষদের নৃশংসভাবে হত্যা করে।
তিনি আরও বলেন, এ মামলার বাদী চারঘাট থানার কালুহাটি গ্রামের গোলাম হোসেনের পিতা শহীদ রওশন আলী সরকার এবং পাশের রোস্তমপুর গ্রামের কলিম উদ্দিনকে এদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আটক করে বিবস্ত্র করে গাড়ির পেছনে বেঁধে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। এর পাশাপাশি বাদী ও তাদের প্রতিবেশী অনেকের বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৭টি মামলায় মোট ১৩২ জন আসামির মধ্যে চারজন পলাতক আসামি ছিল। এদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। পলাতক বাকি দুজনের মধ্যে একজন মারা গেছে আর বাকি একজন এখনো পলাতক। এ ছাড়া ১৩২ জন আসামির মধ্যে ৫৩ জন মৃত্যুবরণ করেছে। বাকি জামিনে রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।